X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছুরি-চাপাতি তৈরিতে ব্যস্ত কামাররা

আনিসুর রহমান স্বপন, বরিশাল
১৮ আগস্ট ২০১৮, ০৭:৫৫আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০১৮, ২৩:৪৯

ছুরি-চাপাতি তৈরিতে ব্যস্ত বরিশালের কামাররা আসন্ন ঈদুল আজহাতে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত করতে চাই ধারালো ছুরি, চাপাতি, দা, বটি ও কুড়াল। তাই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে এসব তৈরি এবং পুরনোগুলো শাণ দিয়ে ধারালো করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বরিশালের কামাররা। এসব মালামালের চাহিদা পূরণে কামাররা দিন-রাত কাজ করছেন। জমজমাট হয়ে উঠেছে কামারপাড়া। এ ব্যস্ততা চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত। গত কয়েকদিন বরিশাল কামারপাড়া ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।

বরিশাল নগরীর হাটখোলা, নতুন বাজার, বাংলাজার, নথুল্লাবাদ সেন্ট্রাল পয়েন্ট মার্কেট, পলাশপুর বৌ-বাজার বেলতলা, তালতলী বাজার, সদর উপজেলার চরকাউয়া, সাহেবেরহাট, লাহারহাটসহ ছোট-বড় সকল হাটে ঘুরে দেখা যায় সেখানকার কামাররা ছুরি চাপাতি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

কোরবানি দিবেন এমন পরিবারের সদস্যরা বা কোরবানির দায়িত্ব পাওয়া কসাইরা নিজেদের চাহিদামতো দা, ছুরি, চাক্কু, চাপাতি, কুড়াল, বটি বানাতে ছুটছেন কামারদের কাছে। তাই গরম লোহা পেটানোর ‘ঠং ঠং’ শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে নগরীর কামারপট্টিগুলো।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, একের পর এক ক্রেতা এসে নগরীর কামারপট্টির দোকানে ভিড় করছেন। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার কামাররা দোকানে বসেই খেয়ে নিচ্ছেন। পুরোনো দুটি দা, একটি বটি ও একটি ছুরিতে শাণ দেওয়ার জন্য কামররা ৩৫০ টাকা রখছেন। অন্য সময়ে এর মজুরি দেড়শ টাকার মতো। আর নতুন একটি ছোরা ৩৫০ থেকে চারশ টাকা, বিভিন্ন সাইজের চাক্কু ৫০ থেকে একশ টাকা, বটি দুইশ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। ক্রেতারা জানান, অন্য সময়ের চেয়ে এখন দ্বিগুণ দাম রাখা হচ্ছে।

কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানির ঈদের সময় তাদের যে বেচাকেনা হয় তা অন্যকোনও সময়ে হয় না। তাই এ ঈদের আগে পেশাজীবী কামারদের সচ্ছল হওয়ার মোক্ষম সময়। অনেক কামার আগে থেকেই এসব মালামাল প্রস্তুত করে ঈদের সময় বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে থাকেন।

কামাররা জানান, এ পেশায় পরিশ্রম অনুযায়ী তারা মূল্য পান না। বাজারে লোহার দাম বেশি। জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু পরিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে এখনও আঁকড়ে আছেন অধিকাংশ কামার।

তালতলী বাজারের বিজয় কর্মকার বলেন, ‘আগে অন্য হাট-বাজারে প্রতিদিন বিভিন্ন লৌহজাত জিনিস বানিয়ে গড়ে পাঁচ থেকে সাতশ টাকা রোজগার হতো। কোরবানির ঈদের আগে লোহার অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন পনেরশ থেকে দুই হাজার টাকা আয় হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে আগেই অতিরিক্ত মালামালের অর্ডার নেওয়ায় গত পাঁচদিন থেকে নতুন কাজের অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’

পলাশপুর বৌবাজারের কামার অতুল কর্মকার বলেন, ‘এবারের ঈদে দিন-রাতে ২০ থেকে ৩০টি কাজে গড়ে প্রতিদিন খরচ বাদে এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করছি।’ তিনি বলেন, ‘একটি বড় দা পাঁচ কেজির লোহা দিয়ে তৈরি করে মজুরিসহ সাতশ টাকা, এক কেজির কুড়াল দুই থেকে আড়াইশ টাকা, চাপাতি প্রকার ভেদে চার থেকে পাঁচশ টাকা, বড় ছোরা ওজন ভেদে তিন থেকে সাড়ে ছয়শ টাকা, কুড়াল তিন থেকে চারশ টাকা দরে বিক্রি করছি।’

হাটখোলার যতীন কর্মকার বলেন, ‘সারাবছরই আমাদের তৈরি জিনিসের চাহিদা থাকে। তবে কোরবারনির ঈদে পশু কোরবানির জন্য নতুন ছুরি, চাপাতি, চাক্কুর কদর বেড়ে যায়। আমরা এসব জিনিসের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আগে থেকেই অনেক জিনিস বানিয়ে রাখি।’

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রনির ব্যাটে প্রাইম ব্যাংককে হারালো মোহামেডান
রনির ব্যাটে প্রাইম ব্যাংককে হারালো মোহামেডান
কুড়িগ্রামে বৃষ্টির জন্য নামাজ, এপ্রিলে সম্ভাবনা নেই বললো আবহাওয়া বিভাগ
কুড়িগ্রামে বৃষ্টির জন্য নামাজ, এপ্রিলে সম্ভাবনা নেই বললো আবহাওয়া বিভাগ
‘উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে’
‘উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে’
২৬ বছরের বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ করলেন মামুনুল
২৬ বছরের বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ করলেন মামুনুল
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা