জামালপুরে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইসলামপুর উপজেলার ৪টি ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ২টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি মানুষ খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে ভুগছেন। এ ছাড়া, নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করায় আমন আবাদের বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী বলেন, বুধবার পানি স্থিতাবস্থায় আছে। এদিন পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানির উচ্চতা ছিল ১৯ দশমিক ৫৯ সেন্টিমিটার।
পানি বৃদ্ধিতে ইসলামপুর উপজেলার দেওয়ানপাড়া, ডেবরা পেইচ, পুর্ব বলিয়াদহ, পশ্চিম বলিয়াদহ, শিংভাঙ্গা, ধর্মকুড়া, চিনাডুলি, বমনা, বড়াইলপাড়া, কুলকান্দিসহ এলাকার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এদিকে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ফসলহানীর শঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
ডেবরাপেইচ গ্রামের কৃষক খোরশেদ আলম বলেন, ‘এক একর জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। পুরো ফসল এখন পানির তলে। জমি তৈরি, ধানের চারা বোনা, সেচ ও কিটনাশক ব্যবহারে ইতোমধ্যে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পানি কয়েকদিন থাকলে রোপণ করা ধানের চারা পচে যাবে। এখন বছরের খাবার কীভাবে জুটবে তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি।’
খোরশেদের মতো যমুনা পাড়ের কৃষক জনু শেখ, বকুল শেখ, ইমান আলী, মিয়ার মোল্লা ও ছাত্তারসহ অনেকেই ধানের আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, ইসলামপুর উপজেলাতে ৯ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত চিনাডুলি, পার্থশি, নোয়ারপাড়া ও কুলকান্দি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
এদিকে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার দেখা গেছে প্লাবিত এলাকার মানুষের মাঝে। অনেকেই নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এখনও উপদ্রুত এলাকায় কোনও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়নি।
ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. ছালাম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনও সহায়তা দেয়নি।’
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, ‘পানি বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত দুর্যোগ অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। তবে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’