গাজীপুরের শ্রীপুরে ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে জখমের পর গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে শ্রীপুর পৌর শহরের দারোগারচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোর্শেদ আলম (২৭) নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার তরগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় এক গার্মেন্ট কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তার স্ত্রী স্বপ্নাকে (২০) গুরুতর আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনিও মাওনা চৌরাস্তায় একটি কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করেন।
স্বপ্নার ভাই শাহজাহান জানান, ‘তাদের মধ্যে গত দুই মাস ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। দুই ধরেই তারা পৃথক ঘরে থাকতো। পথচারীদের চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে স্বজনেরা দুই জনকে উদ্ধার করে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বপ্না সকালে তার কর্মস্থলের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। এসময় মোর্শেদও তার পেছন পেছন বের হয়। রাস্তায় তাদের দুই জনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মোর্শেদ তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রী স্বপ্নার পেটে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই স্বপ্না লুটিয়ে পড়েন। পরে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে ভেবে স্বামী মোর্শেদ ছুরিকাঘাতে নিজের গলা কেটে ফেলে। আশপাশের লোকজন এসে দুইজনকে উদ্ধার করেন। 
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক বলেন, ‘মোর্শেদ আলমকে মৃত অবস্থায় শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্ত্রী স্বপ্নাকে গুরুতর আহতাবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
মোর্শেদের খালাতো ভাই আব্দুল কাইয়ুম জানান, ‘আমার ভাইকে আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় ৭ বছর আগে শ্রীপুর পৌর শহরের দারোগারচালা এলাকার বাচ্চু মিয়ার মেয়ে স্বপ্নার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয় মোর্শেদের। বিয়ের বিষয়টি মোর্শেদের পরিবার মেনে না নেওয়ায় মেয়ের বাড়িতেই তারা বসবাস করতো। এসব কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। তাদের চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। মাস খানেক ধরে তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় এ নিয়ে শনিবার তারা বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। পরে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে স্বামীও একই ছুরি দিয়ে আত্মহত্যা করে। নিহত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে।’
