X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খাগড়াছড়িতে বাড়ছে নারী বাইকারদের সংখ্যা

জসিম মজুমদার, খাগড়াছড়ি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:৪৮আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৩৩

খাগড়াছড়িতে নারীরা স্কুটিতে করে নিজ নিজ কাজে যাচ্ছেন কেমিয়া চাকমা। পেশায় কলেজ শিক্ষিকা। খাগড়াছড়ি সদরের মধুপুরে তার বাড়ি হলেও কর্মস্থল সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া কলেজ। ওই শিক্ষিকাকে প্রতিদিন ১৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কর্মস্থলে যেতে হয়। গণপরিবহনের ওপর নির্ভর না করে স্কুটি চালিয়ে নিয়মিত কলেজে যাচ্ছেন তিনি। এতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে তার।

শুধু শিক্ষিকা কেমিয়া চাকমাই নয়, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সড়কে এখন তার মতো প্রায় শতাধিক নারী স্কুটি চালাচ্ছে। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে এবং গণপরিবহনের ঝামেলা এড়ানোর জন্য পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের কাছে এ বাহনটি বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের দেখে অনেক নারীই স্কুটি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া কলেজের ম্যানেজমেন্টের লেকচারার কেমিয়া চাকমা বলেন, ‘প্রথমে পরিবারের কেউ স্কুটি ব্যবহারে সাপোর্ট বা সমর্থন করেনি। আমি নিজের ইচ্ছায় বছরখানেক আগে স্কুটি কিনেছি। গত এক বছরের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি গণপরিবহনের চেয়ে স্কুটি ব্যবহারে ঝামেলা অনেক কম, সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও সময়োপযোগী।’

খাগড়াছড়ি সদরের নারী উদ্যোক্তা আনুচিং মারমা বলেন, ‘স্কুটি কেনার পরপরই কাজে গতি এসেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সময় মতো যাওয়া আসা করতে পারি। আগে যেমন বিভিন্ন পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে হতো, এখন সেই ঝামেলা নেই।

শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী ত্রিপুরা বলেন, ‘এখন সময় মতো কলেজে যেতে পারি, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারি। বন্ধুদের পৌঁছে দিতে পারি। নিজেকে অনেক আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে।’

পাবলিক যানবাহনের ঝামেলা এড়াতে নারীরা এখন স্কুটির দিকে ঝুঁকেছেন খাগড়াছড়ি সদরের নৃত্যশিল্পী রিয়া চাকমা বলেন, ‘স্কুটি আমার কাছের বন্ধুতে পরিণত হয়েছে। আমি এখন সব কাজ সময় মতো করতে পারি। নারীরা স্কুটি চালাচ্ছে এই বিষয়টি নিয়ে এখনো সামাজিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। অবস্থানগত কারণে অনেক সময় ইভটিজিং ও হয়রানির শিকার হতে হয়। তবে যেভাবে নারী স্কুটি চালকের সংখ্যা বাড়ছে তাতে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো সময়ের ব্যাপার।

খাগড়াছড়ি শহরের মেসার্স আম্বিয়া মোটরর্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আগের তুলনায় এখন স্কুটি বাইকের ব্যবহার বেড়েছে। তবে গড়ে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা দামের স্কুটির ক্রেতার সংখ্যা বেশি। গ্রাহকদের চাহিদার ওপর নির্ভর করেই আমরা শোরুমে স্কুটি রাখছি।

খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান জানান, ‘সামাজিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বাইক চালানোর সময় নারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন এমন অভিযোগ এখনও তিনি পাননি। তবে সবক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতার কথা মাথায় রেখেই কাজ করে পুলিশ। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নারী বাইকারদের কেউ হয়রানির চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, ‘খাগড়াছড়িতে শতাধিক নারী স্কুটি বাইক ব্যবহার করছে। অনুকূল পরিবেশ আছে বিধায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন হোন্ডা শোরুমে অনেক স্কুটির অর্ডার পড়েছে। স্কুটি ব্যবহারে নারী বাইকারদের যেমন সুবিধা হচ্ছে, তেমনি ব্যবসায়ীদেরও লাভ হচ্ছে।

/জেবি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!