X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বন্ধের পথে নাটোরের দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র

নাটোর প্রতিনিধি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:১১আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:২৪

 

 

বন্ধের পথে নাটোরের দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র দুধ সংগ্রহ বন্ধ করার প্রায় সাত মাস পর এবার নাটোরের দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি টাঙ্গাইলে স্থানান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ৫ হাজার লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ফার্মকুলার এবং বুধবার জেনারেটরটি ট্রাকযোগে টাঙ্গাইলে পাঠানো হয়। এলাকার খামারিরা ধারণা করছেন, শিগগির আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রটি বন্ধ ঘোষণা করা হবে। এ নিয়ে তারা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।
নাটোর দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলা টিবিউনকে জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন,অর্থ ও সমিতি) উপ-সচিব মনজুর কাদির স্বাক্ষরিত এক জরুরি তাগাদাপত্র পাওয়ার পর মঙ্গলবার ফার্মকুলার মেশিন ও বুধবার জেনারেটরটি টাঙ্গাইল দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাকেও রাজশাহীর বাঘাচারঘাট কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০০২ সালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বাসুদেবপুরে এক একর জায়গায় পাঁচ হাজার লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন নাটোর দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র চালু করা হয়। বর্তমানে শীতলীকেন্দ্রটি দুই একর জায়গায় সম্প্রসারিত। এটি চালু হওয়ার পর এলাকায় ৫০-৬০টি সমিতির আওতায় দেড় শতাধিক খামার গড়ে ওঠে। খামারিরা তাদের গরুর দুধ নিয়মিতভাবে এখানে পাঠাতে থাকেন। কিন্তু শীতলীকরণ কেন্দ্র দুধের দাম তুলনামূলকভাবে কম দেওয়ার অভিযোগে খামারিরা দুধ সরবরাহ কমিয়ে দেন। ধীরে ধীরে খামারির সংখ্যা কমে ১৪টি সমিতির আওতায় একশ’তে নেমে আসে। উভয়পক্ষে টানাপোড়েনের ধারাবাহিকতায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চাহিদা অনুযায়ী দুধ সরবরাহ না পাওয়ার কারণ উল্লেখ করে শীতলীকরণ কেন্দ্রে দুধ সংগ্রহ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর স্থানীয় খামারিরা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় দুধ ঢেলে প্রতিবাদ, মিছিল ইত্যাদি করলেও কোনও ফল পাওয়া যায়নি। অবশেষে শীতলীকরণ কেন্দ্রের ফার্মকুলার ও জেনারেটরও টাঙ্গাইলে স্থানান্তর করা হলো।
এ ব্যাপারে স্থানীয় খামারি নলডাঙ্গা উপজেলার বিপ্রবেলঘড়িয়া গ্রামের প্রদীপ কুমার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার খামারে ৭টি গরু আছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দুধ সরবরাহ বন্ধ করলেও পুনরায় তা চালু করা হবে এমন আশা থেকে বিভিন্ন চা দোকান, বাজার ও বাড়ি বাড়ি দুধ বিক্রি করে কোনওমতে খামারটি পরিচালনা করে আসছিলাম। কিন্তু শীতলীকরণ কেন্দ্রের ফার্মকুলার ও জেনারেটর স্থানান্তর হওয়ায় আমরা হতাশায় পড়ে গেছি। স্থানীয় বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে খামার করলেও এখনও পর্যন্ত সেই ঋণ পরিশোধ করতে পারিনি। দুধ বিক্রির জায়গা বন্ধ হয়ে গেলে খামার বন্ধ করে দিতে হবে। আর তা হলে ঋণের টাকা পরিশোধসহ সংসার চালানো নিয়ে বিপদে পড়ব।’ তিনি স্থানীয় খামারিদের কথা বিবেচনা করে স্বল্প পরিসরে হলেও শীতলীকরণ কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে বানুরভাগ গ্রামের খামারি নজরুল ইসলাম এবং বৈদ্যবেলঘড়িয়া এলাকার খামারি ভরত কুমার জানান, দুগ্ধ শীতলীকেন্দ্রটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে তারা দুধ সরবরাহ করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। এখন কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে তারা চলবেন কী করে? তার মতো ১০০টি খামারির ১০০টি সংসারে নেমে আসবে অসহনীয় দুর্যোগ। কেন্দ্রটি দ্রুত চালু করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণে তিনি সরকারের সহায়তা কামনা করেন।

 

/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা