কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নাজমুল হাসান নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) রাত পৌনে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন আবাসিক হলের ২২৯নং কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নাজমুল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নাজমুল সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার বারাত নামক গ্রামের আব্দুল মালেক গাজীর ছেলে।
আবাসিক হল ও চিকিৎসা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় নাজমুল তার বন্ধু নাদিমকে ফোন করে রুমে আসতে বলে। পরে নাজমুলের রুমে নাদিম গিয়ে দেখে রুম ভেতর থেকে বন্ধ করা। এরপর নাজমুলকে কয়েকবার ডাকার পরও কোনও সাড়া না পেয়ে নাদিম দরজা ধাক্কা দিতে থাকে। একপর্যায়ে পাশের রুমের কয়েকজন শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে রুমের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। এরপর দরজা ভেঙে রুমে ঢুকে তারা নাজমুলকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর নাজমুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক বদিউজ্জামান নাজমুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাজমুলের সহপাঠীরা জানান, ‘পূজার ছুটিতে তারা দুই-তিন ধরে গ্রামের বাড়িতে ছিল। নাজমুল হাই প্রেসারের রোগী । বেশ কিছুদিন ধরে সে অসুস্থবোধ করছিল। বিষয়টি নিয়ে নাজমুল হতাশার মধ্যে থাকতো।
চিকিৎসক বদিউজ্জামান বলেন, ‘নাজমুলকে মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে আসা হলে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পাই। ’
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরপর সেখান থেকে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।’
আইন ও শরীয়াহ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড.রেবা মণ্ডল বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা রুখতে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও অনেক দায়িত্ব থাকে। জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেই কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে চলে আসি। এরপর পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর রুম পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’