ঢাকার দোহারে তানজিলা আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরীকে হত্য করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ২টায় উপজেলার বানাঘাটা এলাকায় একটি ধঞ্চে ক্ষেত থেকে তানজিলার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে দোহার থানা পুলিশ। এই ঘটনায় সন্দেহপূর্বক মো. জিয়া (৩৮) ও মো. শাহজাহানকে (৪২) পুলিশ আটক করেছে। দোহার থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর ধারণা, তানজিলাকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া ধর্ষণের বিষয়ে সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছেন না বলে জানান দোহার থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কিশোরী তানজিলা আক্তারের বাবার নাম মৃত নুর ইসলাম। তাদের বাড়ি দোহারের বানাঘাটা গ্রামে। হতদরিদ্র তানজিলা একই গ্রামের জৈনক রিপন শরীফের বাড়িতে কাজ করতো। সকাল ১০টার সময় সে বাড়ির পাশে একটি ক্ষেত থেকে সবজি তুলতে যায়। প্রায় দেড়-দুই ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সে বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন তাকে খুঁজতে বের হয়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করার পর একপর্যায়ে রিপন শরীফের পরিবার জানতে পারে ওই গ্রামের একটি ধঞ্চে ক্ষেতে গলাকাটা অবস্থায় তানজিলার লাশ পড়ে আছে। পরে তারা খবর দিলে পুলিশ এসে তানজিলার লাশ উদ্ধার করে। বিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যালে পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. জিয়া ও ধঞ্চে ক্ষেতের মালিক মো. শাহজাহানকে আটক করেছে। আটক জিয়ার বাবার নাম মো. সোনা মিয়া। তার বাড়ি একই গ্রামে। সে কয়েক বছর প্রবাসে থাকার পর দেশে এসেছে।
গৃহকর্ত্রী রিপন শরীফের স্ত্রী তানজিলার পালক মা জলি বেগম বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি তানজিলাকে আমার বাড়িতে রেখে মানুষ করেছি। সকালে আমাকে না জানিয়ে সে পাশের ক্ষেতে সবজি তুলতে যায়। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
নিহত তানজিলার মা ইতি খাতুন বলেন, আমি দরিদ্র হওয়ায় আমার মেয়েটিকে ছোট সময়েই রিপন শরীফের বাড়িতে পালক হিসেবে দিয়েছিলাম। সেখানে খেয়ে-পরে তানজিলা ভালোই ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীরা আমার মেয়েকে বাঁচতে দিলো না। আমি ঘাতকদের ফাঁসি চাই।
দোহার থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থল থেকে তানজিলার লাশ উদ্ধার করেছি। এ ব্যাপারে নিহতের পালক বাবা রিপন শরীফ বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
