মালটা পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও সমতল ভূমিতেও রয়েছে এ ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা। উত্তরের কৃষি প্রধান এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের মালটা। মাটির গুণাগুণ ঠিক থাকলে সমতল এলাকাতেও মালটা চাষ করে লাভবান হতে পারেন কৃষকরা- এমনটাই জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার গাঙ্গর গ্রামের সফল মাল্টা চাষি মুনছুর আলী।
মুনছুর আলী জানান, শখের বসে কয়েক বছর আগে বাড়ির আঙ্গিনায় একটি মাত্র গাছের চারা রোপন করেন। বেশ ভালো ফলন দেখতে পেয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ৫ বিঘা জমিতে বারি-১ জাতের মালটা চাষ শুরু করেন তিনি। এবার এক-একটি গাছে গড়ে প্রায় ১০০-১২০টি করে মালটা ধরেছে।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য ফল আবাদের তুলনায় মালটা চাষ লাভজনক এবং খরচও কম। চারা রোপনের দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যেই ফল পাওয়া যায়। এছাড়া কোনও প্রকার কীটনাশক, ফরমালিন বা পেস্টিসাইটের প্রয়োজন হয় না। এ জন্য এটা বিষমুক্ত ফল।
ভুল্লি এলাকার ফল ব্যবসায়ী কাজল মালটা কিনতে এসে বলেন, এ বাগানের মালটা দারুণ রসালো এবং বাজারের আমদানি করা যে কোনও মালটার চেয়ে বেশি মিষ্টি। তাই বাজারে বিক্রি করে ভাল দাম পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা বলছেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা মালটার চেয়ে দেশে উৎপাদিত এই মালটার মিষ্টি কোন অংশে কম নয়, বরং বেশি স্বাদ দেশি মালটার।
মালটা চাষি মুনছুর আলীর দাবি- বিদেশ থেকে আমদানি করা মালটার মিষ্টতা যেখানে ৯-১০ শতাংশ, সেখানে এসব দেশি মালটার মিষ্টির পরিমাণ ১৩-১৪ শতাংশ। তার মালটা চাষের সাফল্য দেখে এলাকার বেকার যুবকরাও মালটা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতররের উপ-পরিচালক কেএম মাউদুদুল ইসলাম বলেন, ‘ভৌগোলিক কারণে এ এলাকার মালটা চাষের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। এ মালটাতে নেই কোনও ফরমালিন, নেই কোনও ঝুঁকি। তাই এই অঞ্চলের মালটা হতে পরে অনেক জনপ্রিয়।’ মালটা চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।