ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কখনও কোনও মহিলা সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। কিন্তু এবার সেই ইতিহাস ভাঙতে চান দুই নারী। ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে অধ্যক্ষ তাহমিনা আখতার মোল্লা এবং ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় সংরক্ষিত মহিলা এমপি সেলিনা জাহান লিটা এবার সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলের কাছে মনোনয়ন চাইছেন। তাঁরা দু’জনই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দু’জনেরই রাজনৈতিক জীবনে বন্ধুর পথচলার ইতিহাস আছে।
গ্রামের পর গ্রাম চষে বেড়ানো এমপি সেলিনা জাহান লিটা ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে মনোনয়ন প্রার্থী। তার জন্ম রাজনৈতিক পরিবারে। বাবা সাবেক এমপি আলী আকবর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। সেলিনা জাহান লিটার নির্বাচন করার শুরু উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে। তিনি রাণীশংকৈল থেকে এই পদে পরপর দু’বার নির্বাচিত হন। এরপরই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে আসেন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।
অন্যজন তাহমিনা হক মোল্লা তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজনীতি শুরু করেছেন। বিগত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোটো ভাই, দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মির্জা ফয়সাল আমিনের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে হেরেছেন। তবে নির্বাচনে তার পরাজয়ের পেছনে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করেন কেউ কেউ। তার আগে তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। তাঁর চলার পথে ছিল না কোনও পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড। যুব মহিলা লীগকে ঠাকুরগাঁওয়ে শক্তিশালী করতে কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন অটিস্টিক শিশুদের একটি স্কুল। ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র ল কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা তিনি। সেই কলেজের অধ্যক্ষও তিনি।
তবে সরকারি দলের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা দু’জনই স্বীকার করেন নারীদের রাজনীতি করার পথ সমাজে এখনও মসৃণ নয়। সমাজের নানা বৈষম্য ও বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। তারা জানান, শুধু বাইরে নয় এ বৈরিতা মোকাবিলা করতে হয় পরিবারেও। এখনও সমাজের সাধারণ ধারণা- নারীরা ঘরে থাকবে, তারা কেন রাজনীতিতে?