X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজবাড়ী-২: আসন রক্ষায় মরিয়া আ. লীগ, জয়ে ফিরতে চায় বিএনপি

তানভীর মাহমুদ, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
০৪ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৫২আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:৩০

রাজবাড়ী-২: আসন রক্ষায় মরিয়া আ. লীগ, জয়ে ফিরতে চায় বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজবাড়ী ২ আসনে জমে উঠেছে মাঠের রাজনীতি। আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। এদিকে জয় পেতে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়েছে বিএনপি। প্রধান এই দুই দলের পাশাপাশি মাঠে নেমেছে জাতীয় পার্টি।
রাজবাড়ী জেলার পাংশা-বালিয়াকান্দি ও কালুখালী এ তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজবাড়ী ২ আসন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলেরই শক্ত অবস্থান আসনটিতে। বরাবরই আসনটি দখলে রয়েছে আওয়ামী লীগের।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম এবারও মনোনয়ন চান। নৌকা প্রতীক পেতে মাঠে আছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকী হক, কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মেহেদী হাসানসহ আরও কয়েকজন।
এদিকে আসনটি পুনরুদ্ধারে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকার আছেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নাসিরুল হক সাবু, কালুখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. আব্দুর রাজ্জাক খান ।
প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি মাঠে রয়েছে জাতীয় পার্টির নেতারা। জাতীয় পার্টির মনোনয়োন চাচ্ছেন জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি আবুল হোসেন মিয়া ও জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. রকিবুল ইসলাম শামীম।
রাজবাড়ী-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে রাজবাড়ী-২ আসনে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলছি। এলাকায় বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্রিজ-কাভার্ট উন্নয়ন এছাড়া হতদরিদ্র মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, গৃহহীন পরিবারকে ঘর নির্মাণসহ নানা ধরনের উন্নয়ন ও মানবসেবামূলক কাজ করেছি, করছি সামনেও করবো। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি বিশ্বাস করি জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবারও মনোনয়ন দেবেন। নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে পুনরায় এই আসনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবো।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকী হক বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে আছি। দলের নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত, বঞ্চিত নেতাকর্মীদের পাশে রয়েছি। সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হওয়ার। এলাকার মাটি ও মানুষের সঙ্গে আমার নিবিড় সম্পর্ক। জননেত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, দলের নেতাকর্মী নির্যাতনকারী, দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী, টেন্ডারবাজ, ভূমিদস্যুরা মনোনয়ন পাবেন না। তার কথার আলোকে তৃণমূল ও জনমতের ভিত্তিতে মনোনয়ন দিলে আমিই মনোনয়ন পাব বলে বিশ্বাস করি। দল মনোনয়ন দিলে আমি অবশ্যই জয়লাভ করতে সক্ষম হবো। এলাকার মানুষের প্রতি আমার সে বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি মনে করেন উন্নয়নের মহাসড়কে নৌকার কান্ডারি হওয়ার যোগ্য আমি, তাহলে অবশ্যই আমাকে মনোনয়ন দিয়ে পাংশা, কালুখালী ও বালিয়াকান্দী উপজেলা তথা আমার নির্বাচনি রাজবাড়ী-২ আসনের মানুষের সেবক হওয়ার সুযোগ দেবেন।’
সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. নাসিরুল হক সাবু বলেন, ‘জনগণের জন্য রাজনীতি করি, এ আসনের জনগণ আমার অনেক আপন। এর আগে এ আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছি। এবারও দলীয় সভানেত্রী খালেদা জিয়া আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে বিশ্বাস করি।’
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও কালুখালী উপজেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সবসময় মাঠে থেকেছি। আশা করি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এসব কথা ভুলে যাবেন না। দল মনোনয়ন দিলে এ আসন থেকে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।’
জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি আবুল হোসেন মিয়া বলেন, ‘আশির দশকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাত ধরে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করি। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের শাসনামল শেষ হলেও দলকে শক্ত হাতে ধরে রেখেছি। পরবর্তী সময়ে পাংশা, কালুখালী ও বালিয়াকান্দিতে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছি। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হলেও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।পরে দলকে চাঙা রাখতে নিয়মিত কর্মী সভা, উঠান বৈঠক, সমাবেশসহ দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছি। এই এলাকার মানুষ এরশাদ ভক্ত । এবার জাতীয় পার্টি এ আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে প্রার্থী করা হলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে দলকে আসনটি উপহার দিতে পারবো।’
জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী পাংশা উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও যুব সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য শামিম আহমেদ বলেন, ‘আমি জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেলে রাজবাড়ী-২ আসনের সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করবো।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৬,২০০৮ ও ২০১৪ সালে আসনটিতে জয় পান আওয়ামী লীগের মো. জিল্লুল হাকিম ও ২০০১ সালে বিএনপির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নাসিরুল হক সাবু।
এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬১ হাজার ১৯২ জন। এরমধ্যে নতুন ভোটার রয়েছে ৫৯ হাজার ৫৫০ জন।

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
প্রথম ধাপে ভোটের হার ৬০ শতাংশ, সর্বোচ্চ পশ্চিমবঙ্গে
লোকসভা নির্বাচনপ্রথম ধাপে ভোটের হার ৬০ শতাংশ, সর্বোচ্চ পশ্চিমবঙ্গে
ইসরায়েলি বিমান কীভাবে এল বাংলাদেশে, প্রশ্ন নুরের
ইসরায়েলি বিমান কীভাবে এল বাংলাদেশে, প্রশ্ন নুরের
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
সর্বাধিক পঠিত
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা   
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা