X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাট ও হোগলাপাতার তৈরি পণ্য যাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে

কাজী তানভীর, রাজবাড়ী
১২ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:০৮আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০১৮, ২০:১০

নানা ধরনের পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত নারীরা   রাজবাড়ী জেলা সদরের ভবদিয়া গ্রামে গড়ে উঠেছে গ্লোবাল গোল্ডেন জুট অ্যান্ড ক্রাফটস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে তৈরি হচ্ছে ব্যাগ, ফুলদানি, টব, ঝুড়ি, পাপোশ, ম্যাট, টুপিসহ শতাধিক বাহারি পণ্য। আর এসব তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পাট এবং হোগলাপাতা। পরিবেশবান্ধব হওয়ায় দেশের বাইরে পণ্যগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মান, জাপান, চীন, কোরিয়াসহ মোট আটটি দেশে রফতানি হচ্ছে এসব পণ্য।

প্রতিষ্ঠানটিতে অধিকাংশ শ্রমিকই নারী। পুরুষের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হচ্ছেন প্রায় তিনশ’ নারী। এখানে কর্মরত নারী শ্রমিক সুখজান বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি নদী ভাঙনের শিকার। বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাচ্ছিল। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোটাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। তখন আমার ছেলে এখানে কাজ শুরু করে। তাতেও অভাব দূর হয়নি। পরে আমি এই কারখানায় কাজ পেয়েছি। এখন আগের চেয়ে ভালো আছি। ’  

আরেক নারী শ্রমিক রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমার মতো এই কারখানায় প্রায় তিনশ’ নারী এখানে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। এই গ্রামের অনেক বিধবা, বয়স্ক, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধী নারী কাজ করে ভালোভাবে দিন পার করছেন।’

কারখানার একাংশ প্রতিষ্ঠানটির ইনচার্জ হাজী মো. মাসেম জানান, গ্রামীণ পর্যায়ে এমন পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়ে ওঠায় কাজ পাচ্ছে গ্রামীণ নারীরা। পুরুষের পাশাপাশি তারাও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। এখানে কাঁচামাল হিসেবে স্থানীয় বাজার থেকে পাট ও নোয়াখালী থেকে হোগলাপাতা সংগ্রহ করে ব্যবহার করা হয়।

জেনারেল ম্যানেজার ও পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পরিবেশবান্ধব হওয়ায় আমাদের পণ্যের বিদেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রস্তুতকৃত পণ্য চট্রগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হয়। কিন্তু দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌপথে নাব্য সংকট ও নানা কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সময়মতো পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এদিকে নজর দিতেন তাহলে বিদেশে পণ্য পরিবহন আরও সহজ হতো। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আরও বৃদ্ধি পেত। 

রাজবাড়ী বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. ফরহাদ হোসেন জানান, গ্লোবাল গোল্ডেন জুট অ্যান্ড ক্রাফটস লিমিটেড পাট ও হোগলাপাতা দিয়ে প্রায় ৪০-৫০ প্রকার পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরি করছে এখানে। এতে অসহায় নারীদের কর্মসংস্থান ও আর্থিক সচ্ছলতা হচ্ছে। উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতা পেলে ভালো করবে। এ ধরনের আরও প্রতিষ্ঠান রাজবাড়ীতে গড়ে উঠলে বেকারত্বও দূর হবে।

 

/এনএএস/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
কুবিতে উপাচার্য-ট্রেজারার-প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, ৩ দফতরে তালা
কুবিতে উপাচার্য-ট্রেজারার-প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, ৩ দফতরে তালা
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে: ম্যাক্রোঁ
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে: ম্যাক্রোঁ
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা