বান্দরবানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে প্রার্থী ৯ জন, বিএনপির ধানের শীষের ১৩ জন ও স্বতন্ত্র থেকে একজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বান্দরবানে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির মধ্যে দলীয় কোন্দল চলে আসছে। এখানে বিএনপির দুটি গ্রুপ রয়েছে। আর এ দুটি গ্রুপেই রয়েছে আলাদা আলাদা সভাপতি, সেক্রেটারি। এই দুটি গ্রুপ থেকেই এবার একাধিক প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এদিকে বান্দরবান আওয়ামী লীগে কোনও দলীয় কোন্দল না থাকলেও সম্প্রতি নতুন করে অনেকে সক্রিয় হয়েছে যারা সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত ছিল। তবে বহিষ্কৃত নেতাদের দাবি, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দলের প্রতি আন্তরিকতার কারণেই বান্দরবানে বীর বাহাদুর উশৈসিং পাঁচ বার ক্ষমতায় এসেছেন। বর্তমানে তাদের জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত করলেও কেন্দ্র থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়নি। তাই তারাও দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার অধিকার রাখেন।
বান্দরবানের আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের ধারণা, দু’দলের প্রার্থীরাই মনোনয়ন পাওয়ার আশায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশা করতে পারেন। এসময় বেশি মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের সমর্থনকেই দল বেশি প্রাধান্য দেবে। আর এ ধারণা থেকেই কৌশল অবলম্বন করতে গিয়ে দলীয় নেতারা একাধিক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করিয়েছেন।
অনেকের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার ব্যাপারে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘এটা হচ্ছে কৌশল। আমাদের জেলা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একজনকে, তিনি হচ্ছেন বীর বাহাদুর। নৌকার প্রতীক শুধু একজনই পাবেন। আজ থেকে আড়াই মাস আগেই সেন্ট্রালে আমাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছি আমরা। সম্প্রতি আমরা শুনতে পাচ্ছি কে বা কারা আমাদের এ সিদ্ধান্তের বাইরে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। যখনই শুনেছি ওই গ্রুপের দুই-তিনজন মনোনয়নপত্র কিনেছেন, তারা যদি এক হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে হাজির হন, তখন বীর বাহাদুরের পক্ষে সাপোর্ট দেবে কে? ওই তিন জনকে বাতিল করার জন্য আমরা বীর বাহাদুরের পক্ষে আট জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি।’
মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা বলেন, ‘বান্দরবানে মনোনয়নের দাবিদার হচ্ছে সাচিং প্রু জেরী, মা ম্যা চিং এবং আমি জাবেদ রেজা-এই তিন জন। আমরা এই তিনজন ছাড়া অন্যরা সাপোর্টিং এর জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি অবশ্যই নির্বাচন করব। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে যদি আমাকে মনোনয়ন না দেয়, তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করব না, এক্ষেত্রে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার হয়েই আমি কাজ করব।’
এদিকে, বান্দরবানে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও পাহাড়ের শক্তিশালী আঞ্চলিক দল পার্বত্য জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউপিডিএফ এর কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেনি। জাতীয় পার্টির নির্বাচনীর তৎপরতাও চোখে পড়েনি।