X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরা-১: শরিক দলের চাপে আ. লীগ-বিএনপি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
২১ নভেম্বর ২০১৮, ১২:১৫আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৩০

আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে শরিক দলের চাপে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এই আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তবে বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ১৮ জন। তবে এই দিক দিয়ে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বিএনপি। তাদের মাত্র ৬ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা অনেক আগে থেকেই কাজ শুরু করেছেন। জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের উঠান বৈঠক, সভা, সমাবেশ, মিছিল ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করতে দেখা গেছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নড়ে চড়ে বসতে শুরু করেছে বিএনপি ও নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী। দলের নিবন্ধন বাতিল হলেও নেতারা সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় গেছে।

আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বিরাজ করছে অস্থিরতা। এরই  বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পাটকেলঘাটা ও কলারোয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সবমিলিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে সাতক্ষীরার চারটি আসনে শরিকদের চাপেই আছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

সাতক্ষীরা-১ আসন রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে প্রার্থীর যেমন ছড়াছড়ি, তেমনি বিএনপি ও জামায়াতেরও রয়েছে শক্তিশালী প্রার্থী। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। ১৪ দলের মনোনয়ন নিয়ে তিনি আরও অংশ নিতে চান একাদশ সংসদ নির্বাচনে। তবে, আসনটি ফিরে পেতে চায় আওয়ামী লীগ। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের ১৮ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

তারা হলেন, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়লা পারভিন সেঁজুতি, সাবেক এমপি বিএম নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সরদার মুজিব, অনিত কুমার মুখার্জি, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা এসএম আমজাদ হোসেন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সরদার রফিকুল ইসলাম, মন্ময় মনির, শেখ আমজাদ হোসেন, কামরুজ্জামান সোহাগ, মনোয়ারা ফারুক, অহিদুল ইসলাম সজিব, আহসান কবির টুটুল ও মোহাম্মদ হোসেন।

বিএনপির প্রার্থীরা বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছেন, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তার স্ত্রী শাহানারা পারভীন বকুল, ঢাকা সুপ্রিম কোর্টের ওয়াছেল উদ্দীন, কলারোয়া বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও কলারোয়া পৌর মেয়র আক্তারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আতিকুজ্জামান রিপন, কেন্দ্রীয় জাসাস নেতা সাংবাদিক আরিফুজ্জামান মামুন মনোনয়ন প্রত্যাশী।

জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দলের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখ্ত ও এম মুনসুর আলি। এছাড়া রয়েছেন জাসদ থেকে দলের যুগ্ম সম্পাদক শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলু।

তবে সবার দৃষ্টি এই আসন থেকে কে নৌকার টিকিট পাচ্ছেন। নাকি আবারও শরীক দল থেকে প্রার্থী করা হবে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা চায়, শরীক নয়, সাতক্ষীরা-১ আসনে সরাসরি আওয়ামী লীগের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। যদিও সেক্ষেত্রে রয়েছে বিপত্তি। কারণ জোটগত নির্বাচনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন। আবার, জাতীয় পার্টি নেতা সৈয়দ দিদার বখতও দলীয়ভাবে শক্ত প্রার্থী। তাই সাতক্ষীরা-১ আসনে প্রার্থী মনোনয়ন ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অস্বস্তিতেই রয়েছে আওয়ামী লীগ।

তাই আওয়ামী লীগসহ মহাজোটের সব দলেই চলছে জল্পনা কল্পনা। কে পাচ্ছেন মনোনয়ন তা নিয়ে রীতিমতো চায়ের কাপে ঝড় উঠছে সাতক্ষীরা-১ নির্বাচনী আসনের অলিতে-গলিতে।

অন্যান্য দলের প্রার্থীরা

তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘২৮ অক্টোবর  রাশেদ খান মেনন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান এমপির নাম ঘোষণা করেন। তিনি কীভাবে এটা করলেন তা আমার বোধগম্য নয়। বর্তমান এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির হলেও তিনি গতবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন কিন্তু আওয়ামী লীগের জন্য কিছুই করেনি।’

বর্তমান এমপিকে মনোয়ন না দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের অনেক নেতা সুপারিশ করছেন এবং বিক্ষোভ সমাবেশেও করেছেন বলেও তিনি জানান। 

তিনি আরও বলেন, জনজরিপের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কাউকে মনোয়ন দেবেন, শরিকদের নয়। বর্তমান এমপির জনগণের সঙ্গে কোনও সম্পৃক্ততা নেই। সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে এটাই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এই আসনটি যদি শরিকের দিলে আওয়ামী ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 

এদিকে, বিএনপি নির্বাচনে আসলে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবই যে সাতক্ষীরা-১ আসনে দলটির প্রার্থী হবেন- এমন বিশ্বাস তৃণমূল নেতাকর্মীদের। ইতোমধ্যে মনোনয়নও কিনেছেন তিনি। যদিও সেখানে তাদের শরীক জামায়াতেরও শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে। এ আসনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্যাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চান। তাই বিএনপিও প্রার্থী মনোনয়নে থাকবে চাপে।

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর মোটরসাইকেল বহরে বোমা হামলা
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা