বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ-কড্ডা-নলকা মহাসড়কে পৃথক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচ নারী ও দুই চালকসহ সাত জন। বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে এ দুটি দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুটি দুর্ঘটনা জন্য বিআরটিএর পক্ষ থেকে মহাসড়কে যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা ও যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলকে দায়ী করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, হাটিকুমরুল হতে সয়দাবাদগামী স্থানীয় প্রিয় পরিবহন বাস (যার নং-ঢাকা মেট্রো-চ-৭৮৬৯) কড্ডার মোড়ে মহাসড়কের প্রায় মাঝখানে এসে অবৈধভাবে দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী তুলছিল। ঢাকা থেকে আলিফ পরিবহনের অপর একটি বাস (নং-ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-২০২৪) বেপরোয়াভাবে বগুড়া যাবার পথে প্রিয় পরিবহনের বাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে প্রিয় পরিবহনের বাসটি কড্ডার মোড়ে আইল্যান্ডে উঠে যায় এবং আলিফ পরিবহনের বাসটি মহাসড়কের পাড়ে পড়ে যায়। এ সময় অপর একটি পাথর বহনকারী ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-২২-০৮২৬) উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা যাবার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রিয় পরিবহনের বাসটিকে সজোরে আঘাত করলে প্রিয় পরিবহনের পাঁচ যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হন ২০ জন।
অপরদিকে, ভোর রাতে সেতুর পশ্চিমে সয়দাবাদে বিপরীতমুখী দু’টি ট্রাকের মুখোমূখি সংঘর্ষে মারা যান ট্রাকের দুই চালক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিবহন বাসগুলোর যত্রতত্র যাত্রী উঠা-নামা এবং সয়দাবাদ মোড়ে মহাসড়কের প্রায় মাঝখানে ট্রাক রেখে শ্রমিকদের লোডিং-আনলোডিংয়ের কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে।
সিরাজগঞ্জ বিআরটিএর ভেহিক্যাল ইন্সপেক্টর তারেক রহমান বলেন, দুর্ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। দুটি দুর্ঘটনার প্রাণহানির জন্য মহাসড়কে যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা ও যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া এসব মহসড়কের ফিটনেসবিহীন বিভিন্ন ধরনের বাস অবৈধভাবে প্রায়ই যাত্রী উঠানামা করে। দুর্ঘটনা কবলিত প্রিয় পরিবহনের বাসেরও কোন ফিটনেস নেই। এসবের বিরুদ্ধে মহাসড়কে প্রায়ই অভিযান চলে, তবে জনগণের মধ্যে সচেতনতা না আসায় নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কড্ডা ট্রাফিক ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আসাদ উদ্দিন বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আলিফ পরিবহনের বাসটি রাস্তার পাশে ছিল। প্রিয় পরিবহন বাসটি তাতে ধাক্কা দেয়। এরপর আরেকটি বাস ও ট্রাক প্রিয় পরিবহনের সঙ্গে ধাক্কা খায়। কড্ডার মোড়ের মাঝখানে উত্তরের লেনটিতে অবৈধভাবে যানবাহন রাখায় প্রায়ই যানজট থাকায় ডান পাশেরটিতে উভয় লেনের বাস চলে, এমন কথা শুনে তিনি বলেন, লোকাল বাসের কারণে এ ধরনের সমস্যা থাকলেও, সেটি নিয়ন্ত্রণের জন্য চেষ্টা চলছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ওসি সৈয়দ সহিদ আলম জানান, সেতুর পশ্চিম পাড়ে মহাসড়কে আমাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবৈধভাবে যানবাহন চলাচল ও যত্রতত্র যাত্রী উঠানামার বিরুদ্ধে প্রায়ই টহল পরিচালনা করি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। তারপরেও কিছু কিছু বেপরোয়া চালকদের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।