কক্সবাজারের টেকনাফে শর্ত সাপেক্ষে আত্মসমর্পণকারী ১০২ ইয়াবা কারবারির মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির চার ভাইসহ ১৪ স্বজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে শীর্ষ ইয়াবা কারবারির তালিকায় থাকা ১০ জন রয়েছেন। পুলিশ সূত্র জানায়, কক্সবাজারে সরকারের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা কারবারি ৭৩ জন।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টেকনাফের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে তারা আত্মসমর্পণ করেন।
বদির স্বজনরা হলেন– আবদুর শুক্কুর, আবদুল আমিন, মোহাম্মদ শফিক, মোহাম্মদ ফয়সাল, বদির ফুফাতো ভাই কামরুল ইসলাম রাসেল, নুরুল আলম, ভাগনে সাহেদুর রহমান, শামসুল আলম শামীম, বেয়াই সৈয়দ হোসেন, তার ভাই জামাল হোসেন, শাহেদ কামাল, মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে দানু, খালাতো ভাই মং অং থেইন ওরফে মমচি।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতি ঘোষণা করেছেন। সে নীতি প্রতিপালনে আমরা অবিচল। কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে। সব আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টায় এ মাদক পাচার বন্ধ করা হবে। কোনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত হলে কেউ রেহাই পাবে না।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, ‘সীমান্তে পুলিশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ইয়াবা। ইয়াবার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কে কার আত্মীয় সেটি দেখা হবে না। যারা আত্মসমর্পণ করেনি এখনও, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘সেফহোম’ থেকে শীর্ষ ইয়াবা কারবারিদের কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ মঞ্চে আনা হয়।মঞ্চের কাছে একটি দোতলা ভবনে তাদের রাখা হয়।আত্মসমর্পণকারীদের দেখতে স্বজন ও এলাকার হাজারও মানুষ ভিড় জমান। এছাড়াও তালিকাভুক্ত কয়েকজন ইয়াবা কারবারিকেও অনুষ্ঠানস্থলে দর্শক হিসেবে কাছে দেখা গেছে।
পৌনে ১১টায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জেলার তিন সংসদ সদস্যও উপস্থিত ছিলেন এ সময়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আত্মসমর্পণকারী ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর মধ্যে ৩০ গডফাদার রয়েছেন। আত্মসমর্পণকৃতদের বিরুদ্ধে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের মামলা হবে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ইয়াবাকারবারিদের আত্মসমর্পণ: সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা ও ৩০ অস্ত্র জমা
আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন যে ইয়াবা কারবারিরা
আজ আত্মসমর্পণ করবে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা, মঞ্চ প্রস্তুত