X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুরা জানে না শহীদ মিনার কী

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৫২আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:১২

স্কুলে নেই শহীদ মিনার নীলফামারী জেলা সদরের ইটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তানিয়া আকতার। তার কাছে, শহীদ মিনার মানে জাতীয় পতাকা। প্রতিদিন অ্যাসেম্বলিতে জাতীয় পতাকায় সম্মান জানানোটাই তার কাছে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো। তানিয়ার মতো জেলার বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষার্থীর কাছে শহীদ মিনারের ধারণা এমনই কিছু। কারণ নীলফামারীর বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট নয় শহীদ মিনার বা ভাষা দিবসের তাৎপর্য।  

২১ ফেব্রুয়ারি এলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলে ব্যাপক প্রস্তুতি। শহীদ মিনার ধোয়া মোছার কাজ শুরু হয়। দিবস চলে গেলে আর কোনও খোঁজ থাকে না।

ইটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকা খানম বলেন,  ‘স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। স্কুলে যদি শহীদ মিনার থাকতো তাহলে এ সম্পর্কে জানতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়তো। এ উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে।’

স্কুলে নেই শহীদ মিনার অভিভাবকরা বলছেন, শিশুরা জানে না শহীদ দিবসের মর্মবাণী। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারের পক্ষে বরাদ্দ নেই। তাই জেলার অধিকাংশ স্কুলে নেই শহীদ মিনার। ফলে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাসও জানতে শিশুদের আগ্রহ কম।

ইটাখোলা ইউনিয়নের উত্তর সিংদই বসুনিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবিয়া খাতুন বলেন,  ‘সরকারিভাবে কোনও বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা  স্কুল পরিচালনা কমিটির জন্য সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস শিশুদের জানাতে শহীদ মিনারের বিকল্প নেই। আমার বিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে দিবসটি পালন করি।’

ইটাখোলা পাটোয়ারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেহেনা বেগম বলেন, ‘শিশুরা জানে না ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। এসব দিবস এলে তা পালন করা হয়, এরপর সারাবছর আর খোঁজ থাকে না। ভাষা সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস জানতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন করা জরুরি।’

স্কুলে নেই শহীদ মিনার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১০৮৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে সদরে ২০৭, ডোমারে ১৫৭, ডিমলায় ২১৯, জলঢাকায় ২৪৯, কিশোরগঞ্জ ১৭৫ ও সৈয়দপুর উপজেলায় ৭৮টি বিদ্যালয় আছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ডিমলা ও জলঢাকায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। তবে সেগুলো বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয়দের উদ্যোগে স্থাপন করা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। স্থানীয়ভাবে অভিভাকদের উদ্বুদ্ধ করে শহীদ মিনার তৈরির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সরকারিভাবে বরাদ্দ না থাকায় ধীর গতিতে এসব কার্যক্রম চলছে।

সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, এই বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। তবে দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় এখানে সরকারি কোনও সহযোগিতা নেই। এজন্য স্থানীয় উদ্যোগে শহীদ মিনার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওসমান গণি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিদ্যালয়গুলোয় প্রত্যেকটি জাতীয় দিবস পালন করা হয়। সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের নির্দেশনা রয়েছে। অনেকগুলোয় তৈরিও হয়েছে, বাকিগুলোয় চলতি বছরেই নির্মাণ করা হবে।’

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা