বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পরিবহন মালিক মাহবুব আলম শাহীনকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনও ক্লু বের করতে পারেনি। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধে তাকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা অগ্রসর হচ্ছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, শাহীন রাজনীতির পাশাপাশি পরিবহন ব্যবসা ও আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। রবিবার রাত সাড়ে ১০টা দিকে শহরের নিশিন্দারা উপশহর বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তরা শাহীনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে।
শাহীনের নিহতের ভাই পরিবহন ব্যবসায়ী ফেরদৌস রহমান, ভাতিজা মাইনুর রহমান ও ছেলে সাফেয়ান আলসাবা সায়েম জানান, শাহীন মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তিনি (শাহীন) মোটর মালিক গ্রুপের একটি পক্ষকে মামলাসহ আইনি সহযোগিতা করতেন। তাই অপরপক্ষ তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়। তারা শাহীনের গাড়ি চলাচলে বাধা ও রবিবার (১৪ এপ্রিল) শেরপুরে গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে ফোনে শাহীনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তাদের বিশ্বাস মোটর মালিক গ্রুপের বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এছাড়া আবাসিক প্রকল্পের একটি পুকুর কেনা নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে শাহীনের বিরোধ চলছিল। তারা শাহীনকে হত্যার সময় সঙ্গে থাকা নুনগোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলীমুদ্দিনকেও সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন।
স্বজনদের কেউ কেউ বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহমেদ খান রুবেলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আগামীতে অ্যাডভোকেট শাহীন সভাপতি পদে নির্বাচন করার কথা। এ কারণেও তাকে হত্যা করা হতে পারে।
শাহীনের ভাইয়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জানান, শাহীনের সঙ্গে তাদের শুধু ব্যবসায়ীক নয়, পারিবারিক সম্পর্কও রয়েছে। তার বিশ্বাস তৃতীয় কোনও পক্ষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। তারা মোটর মালিক গ্রুপের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে তাদের দায়ী করানোর চেষ্টা করছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, সোমবার বিকাল পর্যন্ত শাহীন হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সঠিক কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। মোটর মালিক গ্রুপের কর্তৃত্ব ও স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্পে পুকুর কেনা নিয়ে বিরোধসহ বিভিন্ন বিষয়কে সামনে রেখে তারা অগ্রসর হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, হত্যার সময় শাহীনের সঙ্গে থাকা নুনগোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলীমুদ্দিন ছুরিকাঘাত করার দৃশ্য দেখলেও তিনি কাউকে চিনতে পারেননি।
জেলা বিএনপি শাহীনের জানাজা শেষে চারদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এছাড়া অ্যাডভোকেটস বার সমিতি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে হত্যাকারীদের আইনগত সহায়তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।