হবিগঞ্জের গুঙ্গিয়াজুরি হাওরে প্রতি বছরই আগাম বন্যার আশঙ্কা থাকে। আগাম বন্যা থেকে ফসল রক্ষা করতে বি হাইব্রিড-৫ ও বি হাইব্রিড-৫৮ এই দুই জাতের ধান রোপন করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। হবিগঞ্জের নাগুড়া ধান গবেষণা কেন্দ্র থেকে এই দুই জাতের ধান উদ্ভাবন করা হয়। অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে অধিক ধান ফলন হওয়ায় খুশি কৃষকরা।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আব্দুল্লাহপুর এলাকার শতাধিক কৃষকের মাঝে বি-হাইব্রিড ধান ৫৮ ও বি-হাইব্রিড ধান ৫ পরীক্ষামূলক ভাবে রোপন করে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে। অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে ও দ্রুতই ধানগুলো পেকে গেছে। যা আগাম বন্যার আগেই কাটতে পেরে খুশি কৃষকরা।
কৃষক ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার শ্রীকান্ত দাশ বলেন, ‘অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে এবার বেশি ফলন হয়েছে। আগাম বন্যার আশঙ্কা থেকে এবার আমরা মুক্ত। এ ফলন দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও এই ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।’
একই এলাকার কৃষক সলিমউল্লা বলেন, ‘আমি গত বছরে ৯৯ শতক জমিতে ধান চাষ করে ৮০ মণ ধান পেয়েছিলাম। এবছর নতুন ধান হাইব্রিড-৫৮ রোপন করে প্রায় ১০০ মণ ধান পেয়েছি। ’
কৃষক রহিম মিয়া জানান, ‘আমরা প্রথমবার নতুন দু’টি ধান রোপন করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। আমাদের ধান দেখে এখানকার অন্যান্য কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে।’
নাগুড়া ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে সকল এলাকায় বন্যার আশঙ্কা থাকে সে সকল এলাকায় বি-হাইব্রিড ধান ৫ এবং ৫৮ রোপণ করা হলে দ্বিগুণ ফলন পাওয়া যাবে।’
এ প্রজেক্টের প্রকল্প কর্মকর্তা ও স্থানীয় এনজিও এসেড এর প্রধান নির্বাহী জাফর ইকবাল চৌধুরী বলেন,‘ধান গবেষণা কেন্দ্র থেকে উদ্ভাবিত বি-ধান ৫৮ ও বি-হাইব্রিড ৫ ধান লাগিয়ে অধিক ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। অন্যান্য ধানের সপ্তাহখানেক আগেই এ ধান কাটার উপযোগী হয়ে উঠে। যে কারণে কৃষকরা এ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।’
নতুন জাতের ধান দেখতে এসে গাজীপুর ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. রুমেনা ইয়াসমিন বতাল, ‘বন্যার আশঙ্কা করে এ ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে। এছাড়া ফলন ভাল হওয়ায় খুশি কৃষকরা। অন্য জাতের ধানের চেয়ে আগে ফলন ধরে এবং বন্যা থেকে মুক্ত থাকে বিধায় এ ধান চাষে কৃষকরা সফলতা বেশি পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।’