ফুটবল কন্যাদের কলসিন্দুর স্কুলের অফিস কক্ষে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনের ঘটনার প্রায় দেড় মাস হতে চললেও রহস্যের কিনারা হয়নি। দীর্ঘ সময়েও কোনও সুরাহা না হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুলিশ বলছে, তদন্ত অব্যাহত আছে এবং দ্রুতই দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে ঘটনার পর থেকে স্কুলের ভোকেশনাল শাখার ল্যাব সহকারী আরিফ সিদ্দিকী এখনও পলাতক রয়েছেন।
গত ১৪ মে ভোরে দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে কলসিন্দুর স্কুলের অফিস কক্ষের তালা ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে অফিসে থাকা ফুটবল কন্যাদের সনদপত্র, উপহার সামগ্রী, ক্রেস্ট, শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ফাইল, কারিগরি শাখার সব কাগজপত্র পুড়ে যায়। পরে এ ঘটনায় ১৬ মে কলসিন্দুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক রতন মিয়া বাদী হয়ে ধোবাউড়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে ধোবাউড়া থানার ওসি আলী আহমেদ মোল্লা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারে তদন্ত কাজ চলছে। তিনি জানান, তদন্তের স্বার্থে স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী, কমিটির সদস্য এবং আশপাশের ব্যক্তিদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দ্রুততম সময়ে তদন্ত কাজ শেষ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তবে দীর্ঘ সময়েও রহস্যের কিনারা না হওয়ায় কলসিন্দুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক রতন মিয়া অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী এবং এলাকাবাসীর মাঝেও ক্ষোভ আছে বলে জানান তিনি। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, আগুন দেওয়ার ঘটনার পর থেকেই স্কুলের কারিগরি শাখার এসএসসি ভোকেশনাল বিভাগের ল্যাব সহকারী আরিফ সিদ্দিকী সোহাগ পলাতক রয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলে স্কুলের কারিগরি শাখার এসএসসি ভোকেশনাল বিভাগে প্রবেশপত্র না আসায় বেশ কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে স্কুল কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করে। বর্তমানে বিষয়টির তদন্ত চলছে। সোহাগ পলাতক থাকায় ওই তদন্তেরও অগ্রগতি করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় অভিভাবক আশরাফ আলী জানান, এলাকার কন্যাদের ফুটবল খেলার সুবাদে স্কুলের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে স্কুলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কিছুটা বদনামও হয়েছে। এই বদনাম কাটিয়ে উঠতে দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি হয়ে পড়েছে।
হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া সার্কেলের এএসপি মো. আলমগীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সব দিক বিবেচনায় রেখে তদন্ত এগিয়ে চলেছে। দ্রুতই জড়িতদের নাম বেরিয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ নারী ফুটবলারদের মাঝে আলোচিত ফুটবল কন্যা মারিয়া মান্দা, সানজিদাসহ অনেকেই এই স্কুলে লেখাপড়া করছেন। কলসিন্দুর স্কুল এবং গ্রামটি সারাদেশে পরিচিতি পেয়েছে এই ফুটবল কন্যাদের জন্যই।