জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে টুঙ্গিপাড়ায় মধুমতি নদীর পাড়ে পাটগাতিতে ও বাঘিয়ার নদীর পাড়ে দুটি ঘাট নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই দুই ঘাটের নির্মাণকাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার উদ্যোগে এই ঘাট দু’টি নির্মাণ করা হচ্ছে।বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে যখন স্টিমার বা বড় লঞ্চে করে আসতেন, তখন টুঙ্গিপাড়ার মধুমতি নদী পাড়ের পাটগাতি লঞ্চঘাট অথবা বাঘিয়ার নদীর পাড়ের লঞ্চঘাটে নামতেন। পরে পায়ে হেঁটে বাড়িতে যেতেন। আবার যখন ঢাকায় ফিরতেন তখন ওই ঘাট দুটির যে কোনও একটি দিয়ে তিনি স্টিমার বা লঞ্চে উঠতেন। তাই এই ঘাট দুটিকে স্মরণীয় করে রাখতে টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা উদ্যোগ নিয়েছে। পাটগাতিতে ৯ কোটি আর টুঙ্গিপাড়ায় চার কোটি টাকা ব্যয় করে আধুনিক লঞ্চঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি গ্রামের হাবিবুর রহমান (৮৫), ঝর্না বিশ্বাস (৬০), টুঙ্গিপাড়া গ্রামের শেখ আব্দুস সামাদ ও শেখ আব্দুস সাত্তার (৫৪) জানান, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুকে তারা এই ঘাটে নেমে বাড়ির রাস্তায় হেঁটে যেতে দেখেছেন। তখন অবশ্য তারা ছোট ছিলেন। তারা জানান, এখন যেমন এই রাস্তাটি প্রশস্ত, তখন এমনটি ছিল না। তবে এই ঘাটগুলো সংরক্ষণ করায় তারা খুশি। তারা বলেন, নতুন প্রজন্মের যারা রয়েছে তারা অনেক ইতিহাস জানতে পারবে। এছাড়া জাতির জনকের সমাধিতে যারা শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন তারা এখানে এসে সময়ও কাটাতে পারবেন, জানতে পারবেন বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে নানা কথা।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা মেয়র শেখ আহম্মেদ হোসেন মীর্জা বলেন, ‘এই ঘাটগুলো নির্মাণের ফলে জাতির জনকের পদচিহ্ন পড়া লঞ্চঘাটগুলো আরও উন্নত হবে। এ প্রজন্মের যারা রয়েছে তারা জানতে পারবে বঙ্গবন্ধুর জীবনযাপন সম্পর্কে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত অন্যান্য স্থান সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান গোপালগঞ্জ এলজিইডি-র নির্বাহী প্রকৌশলী একে ফজলুল হক জানান, ‘প্রকল্প দুটি ২০২০ সালের জুন নাগাদ শেষ হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন দৃষ্টিনন্দন ঘাট হবে, তেমনি জাতির জনকের পদচিহ্ন পড়েছে সে ঘাটগুলোতে সেখানে পর্যটকেরা এসে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবেন। বিশ্রাম নেওয়ার মতো ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে সেখানে। তাই এই ঘাটে এসে মধুমতি নদীর মনোরম দৃশ্যও দেখতে পারা যাবে। তাছাড়া ঐতিহ্যবাহী পাটগাতি বাজারের মালামাল ওঠানামাও করতে পারবেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।’