X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন দৃষ্টিশক্তিহীন রাফি

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
১৭ জুলাই ২০১৯, ২১:০৩আপডেট : ১৭ জুলাই ২০১৯, ২২:৩৩

সাইফুদ্দিন রাফি তিন বছর বয়সে চুন পড়ে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান চট্টগ্রামের পটিয়ার সাইফুদ্দিন রাফি। তখন থেকেই অন্ধত্বকে সঙ্গী করে পথচলা শুরু। তবে এই প্রতিবন্ধিতা তার শিক্ষাজীবনে খুব একটা বাধা হতে পারেনি। উল্টো অন্ধত্বকে জয় করেই শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাফল্য পেয়েছেন রাফি। সর্বশেষ এইচএসসি পরীক্ষায়ও সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন; পেয়েছেন জিপিএ-৫।

সাইফুদ্দিন রাফি পটিয়ার ৯ নম্বর জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের উজিরপুর এলাকার মৃত আজহার উদ্দিনের একমাত্র ছেলে। পটিয়া সরকারি কলেজ থেকে এবার তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তার বড় দুই বোন আছেন। রাফির বড় বোন রিফাত আরা আঁখি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক। বড় বোনই তার পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। আর অন্যজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

রাফির বড় বোন রিফাত আরা আঁখি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের এই ফলাফলে আমরা খুব আনন্দিত। বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। আমরা চাই অন্ধত্বের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে রাফি আরও অনেক দূর এগিয়ে যাক।’ তিনি বলেন, ‘শুধু এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে তা নয়, পিএসসি, জেএসসি, এসএসসিতেও রাফি জিপিএ-৫ পেয়েছে।’

আঁখি আরও বলেন, ‘রাফি অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে। আমাদের বাড়ি থেকে তার কলেজ অনেক দূরে ছিল। এরপরও সে একদিনও ক্লাস ফাঁকি দেয়নি। বাড়ি থেকে কিছু দূর হেঁটে যাওয়ার পর সিএনজিতে তাকে কলেজে যেতে হতো। বাবা মারা যাওয়ার পর আমরা তাকে অনেক কষ্টে পড়াশোনা করাচ্ছি। আমরা চাই, অন্ধত্বকে জয় করে সে বড় কিছু হোক।’

রাফিদের আইসিটি পড়িয়েছেন পটিয়া সরকারি কলেজের পদার্থ বিভাগের প্রভাষক সাইফুদ্দিন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘মানবিক থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক কঠিন কাজ। তার ওপর তার সামনে ছিল অন্ধত্বের মতো একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে অসাধারণ সাফল্য। রাফির এই ফলাফলে আমি মুগ্ধ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কলেজে বেইল বইয়ের সংকট আছে। তাই সে খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করতো। তবে সে সবসময় ক্লাসে উপস্থিত থাকতো। ক্লাসে উপস্থিতির কারণেই সে ভালো ফলাফল করতে পেরেছে।’

সাইফুদ্দিন রাফি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার বাবা এমপিওভুক্ত একটি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। তিনি দুই বছর আগে মারা যান। তারপর থেকে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি। বাবা বেঁচে থাকতে তার সঙ্গে স্কুলে যেতাম। তিনি মারা যাওয়ার পর বন্ধুরা আমাকে কলেজে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতো। বাড়ি থেকে ২ মিনিট হেঁটে এরপর ১৫ মিনিট সিএনজিতে করে কলেজে যেতে হতো।’

পড়াশোনা করে কী হতে চান, জানতে চাইলে রাফি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমি ইংরেজির লেকচারার হতে চাই। তবে তার আগে এখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাই।’ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছেন বলেও জানান রাফি।

/এমএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ ডেকেছে ইসলামী আন্দোলন
৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ ডেকেছে ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী ব্যাংকের নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন
ইসলামী ব্যাংকের নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন
ওলামা দলের আংশিক কমিটি দিয়েছে বিএনপি
ওলামা দলের আংশিক কমিটি দিয়েছে বিএনপি
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী