ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসটি গত বছর উদ্বোধন করা হয়। এরই মধ্যে ফেনীতে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ওভারপাস সড়কটির বিভিন্ন অংশ দেবে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। গর্তে পড়ে ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা, ভাঙছে গাড়ির চাকা। এ অবস্থায় মহাসড়কে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে অসংখ্য যানবাহন ।
সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ নিয়ে কথা হয় চলাচলকারী যানবহন চালকদের সঙ্গে।
ওই রুটের ট্রাক চালক নুর হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মাল নিয়ে ফেনী রেলওয়ে ওভারপাসের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় গর্তের মধ্যে গাড়ির চাকা আটকে গিয়েছিল। এতে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একপাশে চলে যায়। ভাগ্যক্রমে তখন পেছনে কোনও গাড়ি ছিল না। বড় বিপদ থেকে দয়াল হেফাজত করেছেন ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী স্টার লাইনের বাস চালক জাহিদুল হক বলেন, সব সময় এ ওভারপাস দিয়ে গাড়ি চালাই। বৃষ্টির আগেই ওভারপাসের ওপরের সড়কে ছোট-বড় গর্ত দেখেছি। বৃষ্টির সময় সড়কের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা পাথর সড়কের ওপর উঠে যায়, কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়। এসব কারণে গাড়ির চাকার ক্ষতি হচ্ছে।
এনা বাসের চালক আব্দুল করিম বলেন, বড় গর্তে পড়ে গাড়ির চাকা ভেঙে পড়ে যেতে দেখেছি। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। যেকোনও মুহূর্তে গাড়ির চাকা বড় গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওভারপাসের রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে ফেনী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউছুল হাছান মারুফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসের সড়ক ও অ্যাপ্রোচ সড়ক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ‘ওভারপাস ও অ্যাপ্রোচ সড়ক’ বাদে মহাসড়কের বাকি অংশ আমাদের তত্ত্বাবধানে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মহাসড়কে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহসড়কে ওইসব গর্ত শনাক্ত করে মেরামতের কাজ চলছে।
সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক মেজর আখতার বলেন, বিষয়টি জানার পর ওভারপাসের সড়কটি পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে মেরামতের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত হওয়ার পর গাড়ির পরিমাণ ও গতি বাড়ায় ফেনীর ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসে সবসময় যানজট লেগে থাকতো। একপর্যায়ে ৬৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৬ দশমিক ৭৯ মিটার দৈর্ঘ্য ও প্রায় ২১ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের রেলওয়ে ওভারপাসটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন। ২০১২ সালে শুরু হওয়া এ কাজ শেষ হয় ২০১৮ সালের ১৫ মে। পরে ১৪ আগস্ট গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।