পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নে এলজিইডি’র রাস্তার কাজ নিম্নমানের হওয়ায় এলাকাবাসীর প্রতিবাদ করেছে। এ ঘটনার পর উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিনে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রেখে নিম্নমানের খোয়াগুলো তোলার নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসী জানান, সিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না। নিম্নামানের সাববেজ তৈরি করে ৩ নম্বার খোয়া দিয়ে কাজ করছে। খোয়ায় পানি দিয়ে রোলার না করায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ জানানো হয়েছেন। এরপরও কর্ণপাত না করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। একারণে গত শনিবার এলাকাবাসী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্র জানায়, এলজিইডি’র অধীনে সলিমপুর ইউনিয়নের বোর্ড অফিস মোড় থেকে চাঁদ আলীর মোড় পর্যন্ত ১,১১৭ মিটার লম্বা এবং ১০ ফিট চওড়া পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় আট মাস আগে ৬৯ লাখ টাকার ঠিকা দেওয়া হয়। ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী নির্মাণ কাজ অনেক আগেই শেষ করার কথা থাকলেও মেয়াদ বাড়িয়ে অনেক পরে কাজ শুরু করেছে। সিডিউল অনুযায়ী রাস্তার সাববেজ ৫০ ভাগ ১নম্বর ইটের পিকেট খোয়া ও ৫০ ভাগ বালু দিয়ে করার কথা।
এলাকাবাসী ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান লিখন জানান, প্রথম থেকেই অত্যন্ত নিম্মমানের কাজ চলছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারকে বার বার বলা হলেও ঠিকাদার শুনেননি। এখানে ১নম্বর ইট দিয়ে কোনও কাজ হচ্ছে না।
রকিবুল সরদার বলেন,‘সাববেজের কাজে তেমন একটা খোয়া দেওয়া হয়নি, শুধু বালি আর মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। যে খোয়া দেওয়া হয়েছে, তাও নিম্নমানের ও ৩ নম্বর ইটের।
আজিজুর রহমান জানান, সাববেজ তৈরির পর পানি দিয়ে রোলার করার নিয়ম থাকলেও রোলার করা হয়নি। এই রাস্তা এক বছরও টেকসই হবে না বলে তিনি জানান।
এলাকাবাসী কামরুজ্জামান স্বপন অভিযোগ করেন, সাববেজ তৈরির পর ল্যাব টেস্ট করার কথা থাকলেও করা হয়নি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নায়েক আব্দুল কাদের বলেন,‘জয়নগরবাসীর প্রাণের দাবি এই রাস্তা। নির্মাণাধীন এই রাস্তায় বিছানো খোয়া ও সাববেজ উঠিয়ে নতুন করে সাববেজ তৈরিসহ ১ নম্বর ইটের খোয়া বিছিয়ে পানি দিয়ে রোলার করার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রেখে নিম্নমানের খোয়া তুলতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি। নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতর থেকে সাববেজের ল্যাবটেস্ট করার পর কয়েকটি স্থানে থেকে সেগুলো উঠানোর কথাও বলা হয়েছে।এলাকাবাসীর যে অভিযোগ করেছে তার সত্যতা পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসীরা জানান, সাব-বেজের উপরে স্থানে স্থানে কিছু পিকেট রয়েছে। রাস্তার পাশে কয়েকটি স্থানে আড়ে বিছানো ৩ নম্বর ইটের খোয়া উঠিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকটি স্থানে পিকেট ফেলা রয়েছে। অভিযোগ করার পর সামান্য কিছু খোয়া উঠানো এবং অল্প কিছু পিকেট ফেলা হয়েছে। সাববেজ নিম্নমানেরই রয়ে গেছে। প্রকৌশলীর পরিদর্শনের পরও কাজ অব্যাহত রয়েছে।
সলিমপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা জানান, আমি এলাকাবাসীর কাছে নিম্নমানের কাজের কথা শুনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি।
কার্যস্থলে উপস্থিত ঠিাকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রাসেল নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ২/৩ গাড়ি মাল খারাপ পড়েছিল। এগুলো উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে।