দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা করায় বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশপ্রেমিক নাগরিককে যারা হত্যা করে, তারা দেশদ্রোহী।’
শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, দেশবিরোধী চুক্তি ও আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যে স্ট্যাটাসের কারণে আবরার ফাহাদকে জীবন দিতে হয়েছে, সেই স্ট্যাটাস সারাদেশের মানুষকে বারবার দিতে হবে। এই স্ট্যাটাস ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। গুম, খুন হত্যার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ অবস্থান নিয়েছে। প্রতিবাদের এই জোয়ারকে ভয়ভীতির মাধ্যমে থামিয়ে দেওয়া সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাবেশে আসার পথে দেখলাম—পুলিশ যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে, দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শান্তিপূর্ণ এই জনসভায় কেন এই যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব? এখানে এত পুলিশ কেন? দেশের সংবিধান কি বাতিল হয়ে গেল? যারা জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কথা, যারা দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কথা, যারা দেশপ্রেমিক নাগরিকদের পক্ষে থাকার কথা, তাদের এই অবস্থা কেন?’
প্রশাসনের উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে খুন করে, অবৈধ ব্যবসা করে, জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়, তাদের পাশে আপনাদের থাকার কথা নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমরা একে-অপরকে সহযোগিতা করার কথা, শ্রদ্ধা করার কথা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নাগরিকদের একটি সুসম্পর্ক থাকার সময় এসেছে, এটা বিবেচনা করতে হবে।’
মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে বিক্ষাভ সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম। নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় এতে অন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ. এম নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই অবৈধ সরকার। এই অসম চুক্তি দেশের মানুষ মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি আলোচনার টেবিলে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন, এটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা না, বাংলাদেশের মানুষের লজ্জা।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাসিনো দুর্নীতির মাধ্যমে যুবলীগ-ছাত্রলীগ থেকে এখন দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদে যখন দেশের রাঘব বোয়ালদের নাম বেরিয়ে আসছিল, ঠিক তখনি দেশপ্রেমিক বুয়েট মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করলো। দেশের মানুষ একদিন এ হত্যাকারীদের জনতার আদালতে বিচার করবে।’