রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওষুধ হাসপাতালের রোগীরা ঠিকমতো না পেলেও বাইরে কিনতে পাওয়া যায়। আর বিনিময়ে কমিশন পান বড় কর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালেরই এক নার্সের এই অভিযোগ।
ওই নার্সের দাবি, ‘হাসপাতালের গেট পার হলেই বেশ কয়েকটি ওষুধের ফার্মেসি রয়েছে। সেগুলোতে হাসপাতালের বেশিরভাগ ওষুধ পাচার হয়। সেখানে বিক্রি নিষিদ্ধ ওষুধগুলো বিক্রি করা হয়! সেই টাকার কমিশন পান বড়-বড় কর্তারা।’
সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে ভোগান্তির আরও অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছেলে সোহাগকে নিয়ে রামনাথপুর গ্রাম থেকে এসেছেন মা আজিফা বেগম। তিনি জানান, তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সকালে একবার ডাক্তার আসে, এরপর রাতে কোনও ডাক্তার আসেন না।
কালুপাড়া গ্রামের আবেদা বেগম জানান, তার মেয়ের পেটে ব্যথা। ডাক্তারকে বললে ওষুধ লেখে দেয়, বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।
বদরগঞ্জ উপজেলা সদরের মন্ডল পাড়ার আসেকুর রহমান জানান, সরকার হাসপাতালের নামে সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ফ্রি ওষুধ দেয় বলে শুনি। কিন্তু, বাস্তবে পেলাম না।
বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ বেডের। অভিযোগ রয়েছে, এক্সরে মেশিন আর বৈদ্যুতিক জেনারেটর বিকল হয়ে পড়ে আছে ধীর্ঘ দিন ধরে। এনেসথেসিয়া আর সার্জিক্যাল বিভাগের কোনও চিকিৎসক না থাকায় সব ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। দুজন নারী চিকিৎসক ছাড়া আর কোনও চিকিৎসকও নেই। জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। প্রয়োজনীয় বেড না থাকায় হাসপাতালের বারান্দায় ফ্লোরিং করে থাকতে হচ্ছে রোগীদের।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. আরশাদ হোসেন দাবি করেন, তিনি দুমাস আগে দায়িত্ব পেয়েছেন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক সংকটসহ সব ধরনের সমস্যার কথা জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।