গফরগাঁওয়ের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের দত্তের বাজার চরে ঝাউ ও কাশবনের প্রায় তিনশ’ একর অনাবাদি জমিতে চাষ করা হচ্ছে ধানসহ শীতের নানা সবজি। ঝাউ ও কাশবনের কারণে প্রায় ১৫ বছর ধরে এসব জমি ছিল অনাবাদি। দীর্ঘদিন পর এসব জমিতে ফসল আবাদ করতে পেরে খুশি শতাধিক কৃষক।
দত্তের বাজার চরের কৃষক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বাবার কাছ থেকে পাওয়া প্রায় তিন একর জমি ২০ বছর আগে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে যায়। ৪ থেকে ৫ বছরের মাথায় ওই জমি জেগে উঠে। পরে চরের জমি কাশ ও ঝাউবনে রূপ নেয়। এসব জমিতে চাষাবাদ করতে না পেরে সংসার চালাতে তিনি পরের জমিতে কাজ করেন। তিনি জানান, ৩ বছর আগে সৌদি প্রবাসী শেখ আব্দুল মান্নানের সহায়তায় কাশ ও ঝাউবন পরিষ্কার করে কৃষকরা নানা ধরনের ফসল ফলাচ্ছেন। এখন আর তাকে আর অন্যের জমিতে কাজ করতে হয় না। তিন একর জমিতে ধানের পাশাপাশি, আলু ও মুলাসহ নানা ধরনের সবজি চাষ করেছেন তিনি।
শুধু আব্দুল কাইয়ুম না, দত্তের বাজার চরের প্রায় শতাধিক কৃষক শীতকালীন সবজি চাষ করছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন মিয়া জানান, কাশ ও ঝাউবনের কারণে দত্তের বাজার চরে দিনের বেলায়ও মানুষ সেখানে যাওয়ার সাহস পেতেন না। এই চরে জুয়ার আসরসহ নানা ধরনের অপকর্ম হতো। এখন চাষবাদের উপযোগী হওয়ায় চরাঞ্চল আলোকিত হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রবাসী আব্দুল মান্নান শেখ জানান, প্রায় ২০ বছর সৌদি আরবের মরুভূমিতে কাজ করে দেশে ফিরে দত্তের বাজার চরকে মরুভূমির মতোই মনে হয়। কৃষকরা চাষাবাদ করতে না পেরে অভাবে দিনযাপন করছিলেন। ঝাউ ও কাশবনকে আবাদি জমির উপযোগী করার জন্য সেচ ব্যবস্থা, রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। ঢাকা থেকে আড়তদাররা এখানকার সবজি ক্ষেত থেকে নিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ আসাদুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকারের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) বাস্তবায়ন ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে অনাবাদি জমিকে আবাদি করার এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।