আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভবান হয়েছেন নীলফামারীর আলু চাষিরা। নতুন আলুর চাহিদা থাকায় দামও ভালো তারা। বাজারে পুরনো আলু ২৫-৩০ টাকা আর নতুন আলু ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আর আলুর আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে।
চলতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবজিসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভের আশা করছেন চাষিরা। তারা আগাম ধান কেটে সাগিতা, গেনোলা ও সাইটা আগামজাতের আলুর চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারে আলুর বাম্পার ফলনের আশাও করছেন তারা।
জলঢাকা উপজেলার কাঁঠালী ইউনিয়নের দক্ষিণ দেশিবাই গ্রামের আলু চাষি পেয়ারুল ইসলাম জানান, শীতের প্রকোপ কম, তাই আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আগাম জাতের আলুর দামও বেশ ভালো।
একই এলাকার উত্তর দেশিবাই গ্রামের আব্দুস সামাদ বলেন, ‘এবার ৭০ শতাংশ (২ বিঘা ১০ শতাংশ) জমিতে আগাম জাতের গেনোলা আলু চাষ করেছি। বিঘা প্রতি সেচ, সার, বীজ, নিড়ানি বাঁধাই, আলু তোলা ও পরিবহনসহ খরচ হয়েছে ২১-২২ হাজার টাকা। এক বিঘা (৩০ শতক) জমিতে আলু হয়েছে ৩০ মণ। প্রতিমণ আলু ২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। খরচ বাদে আমার লাভ হবে ৩৮ হাজার টাকা।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, গত বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছিল২২ হাজার ৮১২ হেক্টর জমিতে। এতে গড় ফলন হয়েছিল ২৩.৫৩ মেট্রিকটন। এবারও ওই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া গ্রামের কৃষক আজাদ আলী বলেন, ‘এবারে এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছুদিন আগে ওই এক বিঘা জমির আলু তুলে বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি আলু ৫৫ টাকা কেজি দরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছি। খরচ বাদে লাভ হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার টাকা। ধান বা অন্যান্য ফসলের চেয়ে আগাম জাতের আলু চাষে প্রচুর লাভ হয়।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই কৃষক আগাম ধান কেটে আলু লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আলুর রোগ দমনসহ কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।