১৯৭১ সালের এই দিনে (৭ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জ শহর পাকিস্তান হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। গোপালগঞ্জ মুক্ত হওয়ার আগে এই অঞ্চলে পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লড়াই হয়। দিনটি পালন উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘বিডি-ক্লিন’ র্যালি ও শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে।
মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘পাকিস্তানের সেনারা ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বর্তমানের জয় বাংলা পুকুর পাড়ের মিনি ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে পালায়। ৭ ডিসেম্বর ভোরে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করে মুক্তিযোদ্ধারা।’
তিনি জানান, গোপালগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় ২৭ মার্চ থেকেই। মুসলিম লীগ নেতাদের সহযোগিতায় পাকিস্তান বাহিনী ৩০ এপ্রিল শহরে প্রবেশ করে। তারা প্রথমেই শহরের ব্যাংক পাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এরপর তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে শহরের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ির অবস্থান জেনে স্বর্ণপট্টি, সাহাপাড়া, সিকদারপাড়া, চৌরঙ্গী ও বাজার রোডে লুটপাট করে আগুন দেয়। এসময় প্রায় এক হাজার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াসহ হত্যা ও নারী ধর্ষণ করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনী মিনি ক্যান্টনমেন্টে সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে হত্যা করে গণকবর দেয়। ৬ ডিসেম্বর ভোরে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মুক্তিযোদ্ধারা শহরের দিকে আসতে থাকে। চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা বলয় সৃষ্টি করে। এদিকে ভারত প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেওয়ায় এখানকার হানাদার বাহিনীর মনোবল আরও ভেঙে পড়ে। তাই তারা পালিয়ে যায়।