X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ধানের দাম কম থাকায় বিঘা প্রতি কৃষকের লোকসান ৫-৬ হাজার টাকা

বগুড়া প্রতিনিধি
১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৫৮আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:১২

আমন ধানে কৃষককে বিঘা প্রতি লোকশান গুনতে হচ্ছে ৫-৬ হাজার টাকা

বগুড়ায় সরকারের আমন ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও বাজারে ধানের দাম কমতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমেছে। বর্তমানে কৃষককে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। বর্গাচাষীদের (যাদের নিজের জমি নেই) অবস্থা আরও শোচনীয়। তাদের ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। ধানের দাম নিম্নমুখী হওয়ার জন্য কৃষকরা মিলারদের দায়ি করছেন। মিলাররা ধান না কেনায় তারা প্রকৃত দাম পাচ্ছেন না বলে জানায়। অন্যদিকে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চাল সংগ্রহ শুরু হলেই ধানের দাম বাড়বে।

শুক্রবার দুপুরে বগুড়ার সর্ববৃহৎ ধানের মোকাম নন্দীগ্রাম উপজেলা সদর, রণবাঘা, কুন্দারহাট ও ওমরপুর হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এলাকায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয় বিআর-৪৯ জাতের ধান। এ ধান প্রতিমণ ৭২০ টাকা থেকে ৭৩০ টাকা, বিআর-৩৪ জাতের ধান ১৩০০-১৪০০ টাকা ও পুরনো মিনিকেট এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। গত সপ্তাহে প্রতি মণ ধানের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমেছে।

নন্দীগ্রামের রিধইল গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা জানান, তিনি এ বছর নিজেদের ১৮ বিঘা জমিতে বিআর-৪৯ জাতের আমন ধান চাষ করেছেন। এবার ফলন কম হওয়ায় তিনি বিঘা প্রতি সর্বোচ্চ ১৫ মণ ধান পেয়েছেন। ধানের বাজার নিম্নমুখী হওয়ায় মাসুদ রানা হিসাব করে দেখেছেন, তার বিঘায় প্রতি ৫-৬ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। তবে বর্গচাষীদের প্রতি বিঘায় ৭-৮ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ক্ষতির কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, মিলাররা ধান না নেওয়ায় বেপারিরা কিনছেন না। আবার খাদ্য বিভাগ লটারি করে কৃষকের কাছ থেকে ধান নেওয়ায় অনেক কৃষক ধান বিক্রি করতে পারছেন না। অন্যদিকে লটারিতে সুযোগ পাওয়া অনেক কৃষক তাদের কার্ড বিক্রি করে দিয়েছেন। এসব মিলিয়ে তারা লোকসান গুণছেন।

রিধইল গ্রামের কৃষক আবদুল বাছেদ ২৩ বিঘা, দোহার গ্রামের তোতা মিয়া ১৫ বিঘা, কৈগাড়ি গ্রামের মজিবর রহমান ২২ বিঘা ও সিংড়া খালাস গ্রামের রহিম উদ্দিন ৬ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। তারাও এ বছর আমন ধানে লোকসানের কথা জানিয়েছেন।

শাজাহানপুর উপজেলার নাদুরপুকুর গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী জানান, ধানের দাম কমে যাওয়ায় বর্গাচাষীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জেলার শেরপুর, ধুনট, সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলার হাট-বাজারে খোঁজ নিয়ে একই চিত্র দেখা গেছে।

কৃষকরা জানান, ধানের দাম না বাড়লে তাদের মেরুদন্ড ভেঙে যাবে। তারা আগামীতে ধান চাষ কমিয়ে দিবেন।

এদিকে গত ২৪ নভেম্বর থেকে বগুড়ায় আমন সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। এবার ২৬ টাকা কেজি দরে ২১ হাজার ২৪৮ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। ১২ উপজেলার তিন লাখ কৃষকের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ২১ হাজার ২৪৮ জনকে নির্বাচন করা হয়েছে। কৃষকদের কাছ থেকে জন প্রতি এক টন করে ধান কেনা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ ধান কেনা চলবে।

এরপরও দিন দিন বাজারে ধানের দাম কমা নিয়ে বগুড়া সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল হক জানান, চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হলে বাজারে ধানের দাম বাড়তে শুরু করবে।

 

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
পাঁচ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন
পাঁচ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন
চুরির ঘটনায় তদন্তে নেমে ৫টি অস্ত্রের সন্ধান
চুরির ঘটনায় তদন্তে নেমে ৫টি অস্ত্রের সন্ধান
ডনেস্কের একটি গ্রাম দখল করলো রাশিয়া
ডনেস্কের একটি গ্রাম দখল করলো রাশিয়া
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক