X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্যাতনের কারণেই প্রীতি রানীর মৃত্যু, দুই আসামির স্বীকারোক্তি

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:০০আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:১৯

খাগড়াছড়ি

মারধরের কারণেই গৃহবধূ প্রীতি রানী ত্রিপুরার মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার ধন লাল ত্রিপুরা ও কল্প ত্রিপুরা। আসামিরা মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) খাগড়াছড়ি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম আফছার এ কথা জানান।

তিনি আরও জানান, ‘বাঙালি এক ছেলের সঙ্গে প্রীতি রানী ত্রিপুরার প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করেছে। যার ফলে ঘটনাস্থলেই প্রীতি রানী ত্রিপুরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে মারা যান। পরে তার লাশ একটি সিএনজিতে করে দিঘীনালা সড়কের রাবার বাগান এলাকায় ফেলে আসে।

আসামিরা হলো, জেলার পানছড়ি উপজেলার রামসিং দেওয়ান পাড়া এলাকার পতেন্দ্র লাল ত্রিপুরার ছেলে ধন লাল ত্রিপুরা (২০) ও দিঘীনালা উপজেলার বাশিরাম পাড়া এলাকার ওমকেশর ত্রিপুরার ছেলে কল্প ত্রিপুরা (১৯)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম আফছার বলেন, ‘জবানবন্দি দেওয়ার সময় উভয় আসামি বলেন ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাতে তারা প্রীতি রানী ত্রিপুরাকে ধরে খাগড়াছড়ি শহরের খাগড়াপুর এলাকার একটি ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে জেএসএস (এমএন লারমা) গ্রুপের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে একজন লাথি দিয়ে প্রীতি রানী ত্রিপুরাকে ক্লাবে ঢুকায়। পরে তারাসহ জেএসএস নেতারা তাকে (প্রীতি রানী ত্রিপুরা) চড়, থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারে। এসময় প্রীতি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে কয়েকজনে মিলে তাকে সিএনজিতে তুলে দিঘীনালা সড়কের রাবার বাগান এলাকায় আসে। পুলিশ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তার মৃত দেহ উদ্ধার করে।

তিনি আরও জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ইং তারিখে গৃহবধূ প্রীতি রানী ত্রিপুরাকে হত্যার অভিযোগে জেলার পানছড়ি উপজেলার কলোনিপাড়া এলাকার বাহার মিয়ার ছেলে আসাদুল ইসলাম রাসেল ও সাওতালপাড়া এলাকার তারা মিয়ার ছেলে আল আমিন এবং দমদম এলাকার মৃত আবদুল বারেকের ছেলে কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ইং তারিখে গ্রেফতার তিন জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল আলমের কোর্টে তুলে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে সন্দেভাজন ১নং আসামিকে ২ দিন এবং ২ ও ৩ নং সন্দেহভাজন আসামির ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ১নং আসামি আসাদুল ইসলামের আরও ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো. গোলাম আফছার জানান, ভিকটিম প্রীতি রানী ত্রিপুরা বিবাহিত ছিল। সে খাগড়াছড়ি সদরের চম্পাঘাট এলাকার হরিশংকর ত্রিপুরার স্ত্রী ছিল। রাতুল মনি ত্রিপুরা নামে তার ৬ বছরের একটি ছেলে আছে। ভিকটিমের মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করে সন্দেহভাজন আসামি আসাদুল ইসলামকে সনাক্ত করা হয়েছে। ভিকটিমের সঙ্গে আসাদুলের জানুয়ারি ২০১৯ থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর সূত্র ধরে ভিকটিম ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ চট্টগ্রামে যায় এবং সেখানে ৩ দিন অবস্থান করে। সেখানে অবস্থানকালে ভিকটিমের সঙ্গে আসাদুলের একাধিকবার কথা বলে। এই সূত্র ধরে আসাদুল এবং তার দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে ৬ জানুয়ারি (সোমবার) ধন লাল ত্রিপুরা এবং কল্প ত্রিপুরাকে গ্রেফতার করলে আসল সত্য বেরিয়ে আসে। ধন লাল ত্রিপুরা ও কল্প ত্রিপুরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর ৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) আসাদুল ইসলাম ও আল আমিনকে আদালত জামিন দেন।

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা