করোনা আক্রান্ত সন্দেহে নওগাঁর রাণীনগরে ঢাকা থেকে আসা এক যুবককে বাড়িতে উঠতে দেয়নি গ্রামবাসী। এদিকে ওই যুবককে তিনটি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই যুবকের বাড়ি রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রাম ইউনিয়নের অলঙ্কারদীঘি গ্রামে।
ভুক্তভোগী যুবকের বাবা বলেন, আমার ছেলে ঢাকায় একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করে। শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাতে সে গায়ে জ্বর আর কাশি নিয়ে নওগাঁয় আসে। এরপর শনিবার (২৮ মার্চ) সকালে নওগাঁ থেকে বাড়িতে আসার সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে স্থানীয় মেম্বার ও গ্রামের কতিপয় লোকজন তাকে বাড়িতে উঠতে দেয়নি। পরে ছেলেকে আদমদীঘি হাসপাতালে নিয়ে যাই। তবে সেখানে তাকে কোনও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে ছেলেকে নিয়ে ভেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের বারান্দায় রাখা হয়। স্থানীয় চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি জানতে পেরে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় ছেলেকে চিকিৎসার জন্য রাণীনগর হাসপাতালে পাঠান। তবে সেখানকার ডাক্তাররা রোগী দেখেই হাতে কাগজ ধরিয়ে নওগাঁ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। শনিবার বিকালে নওগাঁ হাসপাতালে পৌঁছার পর সেখানেও কোনও চিকিৎসা না দিয়ে রাজশাহী নিয়ে যান বলে হাতে কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, এতগুলো হাসপাতাল ঘুরেও আমার ছেলে কোনও চিকিৎসা পায়নি। বাধ্য হয়ে ছেলেকে নিয়ে রাজশাহী হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুত নিচ্ছি।
বাড়িতে উঠতে না দেওয়ার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু বলেন, ছেলেটা করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করার পর তার পরিবারকে বলেছি মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে তাকে গ্রামে আনতে। যদি করোনা ভাইরাস না থাকে, তাহলে সমস্যা নেই। আর যদি ভাইরাস থাকে, তাহলে তার চিকিৎসার প্রয়োজন।
রাণীনগর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কেএইচএম ইফতেখারুল আলম খাঁন বলেন, প্রচণ্ড জ্বর আর কাশি নিয়ে ওই যুবক আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা তাকে নওগাঁ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, রাণীনগর হাসপাতাল থেকে নওগাঁ সদরে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে সত্যিই সে করোনা আক্রান্ত কিনা, তা পরীক্ষা ছাড়া বলা যাবে না।