X
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

নেসকোর গড়বিলের চাপে দিশেহারা সিরাজগঞ্জের গ্রাহকরা

আমিনুল ইসলাম খান রানা, সিরাজগঞ্জ
২৩ জুন ২০২০, ১১:১২আপডেট : ২৩ জুন ২০২০, ১১:১৮

 

সিরাজগঞ্জের নেসকো কার্যালয় করোনা সংক্রমণের মধ্যে সিরাজগঞ্জে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) ‘গড়বিল’ নামের ভুতুড়ে বিলের চাপে বিপাকে পড়েছেন গ্রাহক। করোনার কারণে আয়-রোজগার না থাকা পরিস্থিতির মধ্যে চাপিয়ে দেওয়া এই বিল পরিশোধ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রাহক। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন নেসকোর প্রি-পেইড গ্রাহকরা। 

জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের শুরুতেই সিরাজগঞ্জে নেসকোর প্রি-পেইড বিদ্যুতের ভেন্ডিং স্টেশনের ছয়টি বুথই রহস্যজনকভাবে বিকল ছিল। ভেন্ডিং স্টেশন থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ কিনতে না পারায় সাড়ে ১৫ হাজার প্রি-পেইড গ্রাহকের অনেকেই নিজ খরচে পোস্ট পেইড ডিজিটাল মিটার কিনতে বাধ্য হন। আবার কেউ কেউ নেসকোর পরামর্শে আবেদন দিয়ে মিটার ডাইরেক্ট করে নিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার শুরু করেন। এরপর তিন মাস ব্যবহৃত বিদ্যুতের ক্ষেত্রে গত বছরের বিদ্যুৎ ব্যবহারের রেকর্ড দেখে গ্রাহকের গড় বিল করতে থাকে নেসকো। গত বছর এ সময়ে মিল-কারখানা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকানপাট চালু থাকলেও এ বছর করোনার ক্রান্তিকালীন সময়ে অধিকাংশই বন্ধ ছিল। বর্তমানে আয়-রোজগার সেভাবে না থাকায় নেসকোর গড়বিলের ভারে মহবিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা।

শহরের বাজার স্টেশন এলাকার কিউএসএস কালার ল্যাবের স্বত্বাধিকারী বাচ্চু বলেন, ‘করোনায় মার্চ মাসে লকডাউনের শুরুতে নেসকো প্রি-পেইড কার্ড দিতে না পারায় মিটার ডাইরেক্ট করে। গত বছর এদিনে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু ছিল, তখন প্রতিমাসে ছয় থেকে আট হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসতো। কিন্তু এবার গত মার্চ মাস থেকে দোকানপাট বন্ধ। এখন আয়-রোজগারও নেই।  আমার পক্ষে গত বছরের বিল দেখে গড় বিল দেওয়া অনেকটা মড়ার উপর খাড়ার ঘা’র শামিল। এ বিষয়ে বার বার বলা হলেও নির্বাহী প্রকৌশলীরা পাত্তা দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে গ্রাহক হয়রানির বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছি।’

সিরাজগঞ্জ স্বার্থ রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ডা. জহুরুল হক রাজা বলেন, ‘গ্রাহককে চেপে ধরতে সারা বছর অনেক সুযোগ পাবে নেসকো। কিন্তু করোনার বাস্তবতা দেখে এসব ভুতুড়ে বিল করা উচিত হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের বিবেচনা করা উচিত।’

এদিকে, ভুতুরে বিল নিয়ে গত ক’দিন থেকে নেসকোর কার্যালয়ে গ্রাহকের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের ঝামেলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় নেসকো কার্যালয়ে গ্রাহক হয়রানির প্রতিবাদ করায় গত ৮ জুন শহর আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন আহমেদ ভোলাকে মারপিট করা হয়। ওই ঘটনায় দালালচক্রের মূল হোতা নেসকোর সাহায্যকারী-কাম-সিস্টেম সুপারভাইজার শফিকুজ্জামান নোমানকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হলেও তার দুই সহযোগী লাইনম্যান-বি আমানুল্লাহ আল কামাল ও আব্দুল মালেক এখনও বহাল তবিয়তে আছেন।

আবাসিক ও নির্বাহী প্রকৌশলী (১) আব্দুর রউফ সরদার বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে সাড়ে ১৫ হাজার গ্রাহক থাকলেও গত মার্চ মাস থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রাহকের মিটার ডাইরেক্ট করা হয়। এ খণ্ডকালীন সময়ের জন্য গ্রাহকের বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিপরীতে আমাদের কোনও রেকর্ড নেই। গত বছরের রেকর্ড দেখেই গড়বিল করতে হবে। ঘণ্টা ভিত্তিক বিল করা হলেও গ্রাহক বরং ক্ষতির মধ্যে পড়বেন।’

অপর নির্বাহী ও আবাসিক প্রকৌশলী গোবিন্দ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘গড় বিল পরিশোধের শর্তে গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মিটার ডাইরেক্ট করা হয়। এখন বিল দিতে এত আপত্তি কেনো। অভিযোগ প্রায়ই আসছে, কিন্তু আমরা নিরুপায়।’

নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. জাকিউল ইসলাম গ্রাহক হয়রানির বিষয়টি জেনে বলেন, ‘সিরাজগঞ্জের নির্বাহী ও আবাসিক প্রকৌশলীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অবশ্যই একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে। ’

/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ফেনীতে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ফেনীতে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি
এনসিপির কর্মসূচিতে আসেননি কোনও দলের শীর্ষ নেতা
এনসিপির কর্মসূচিতে আসেননি কোনও দলের শীর্ষ নেতা
গাজায় ত্রাণ বিতরণের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
গাজায় ত্রাণ বিতরণের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
আ.লীগের বিচারের আগে কোনও নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না: চরমোনাই পীর
আ.লীগের বিচারের আগে কোনও নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না: চরমোনাই পীর
সর্বাধিক পঠিত
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের