বরিশালে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রতারক চক্রের তিন নারী সদস্যকে আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া থানা পুলিশ। রবিবার (১২ জুলাই) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. খাইরুল আলম। আটককৃতরা হলো—মাহিনুর বেগম, স্বর্ণা হাওলাদার ও ফেরদৌসি আক্তার রুমা।
পুলিশ জানায়, মাহিনুর বেগম বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ লামছড়ি এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু সে নগরীর ভাটিখানা এলাকার কবির মঞ্জিলের ভাড়া ফ্ল্যাটে অপর আটককৃতদের নিয়ে বাস করতো। স্বর্ণা হাওলাদার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া এলাকার বাসিন্দা এবং ফেরদৌসি আক্তার রুমা বরিশাল নগরীর ভাটিখানার বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, গত ১০ জুলাই নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা ফল ব্যবসায়ী হাসান খানের কাছ থেকে মাহিনুর এক কেজি আম ক্রয় করে। ফল ক্রয়ের পরে ওই নারী হাসান খানকে ফোনে জানায় তার ক্রয়কৃত আম পচা এবং তার আরও তিন কেজি আমের প্রয়োজন। এরপর ওই নারী তিন কেজি আম ক্রয় করে এবং টাকা নেই জানিয়ে ফল ব্যবসায়ীকে বাসায় নিয়ে যায়।
এরপর পরস্পরের যোগসাজশে মাহিনুর তার ফ্ল্যাটের অপর বাসিন্দা এবং সহযোগী স্বর্ণা হাওলাদার ও ফেরদৌসি আক্তার রুমা ফল ব্যবসায়ী হাসানকে ফাঁদে ফেলে। তারা বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই এলাকার চরহোগলা গ্রামের নাদিম হাওলাদার নামে এক যুবকের সহায়তায় ব্যবসায়ীর জামা-কাপড় খুলে মোবাইলে অশালীন ছবি ধারণ এবং জিম্মি করে।
পরে তার কাছে চক্রটি ২ লাখ টাকা দাবি করে, অন্যথায় অশালীন ছবি ও ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ী ১১ হাজার টাকা দিয়ে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পান। বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পারলে কৌশলে অভিযান চালিয়ে তিন নারীকে আটক করে। তবে নাদিম পালিয়ে যায়।
উপ-পুলিশ কমিশনার খায়রুল আলম বলেন, ‘এরা একটি চক্র। আরও অনেকের সঙ্গে এর আগে এরকম করার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) জাকারিয়া রহমান জিকু, সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল হালিম, কাউনিয়া থানার ওসি আজিমুল করিম, ওসি (অপারেশন) হিরন্ময় সরকার, ওসি (তদন্ত) সগির হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।