করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেও সংবিধান রক্ষা ছিল জরুরি। তাই সিইসি’র ভাষায় ‘বাধ্য হয়ে আয়োজন করা’ বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়েছে যদিও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আগেই নির্বাচনের মাঠ ছাড়ায় ভোটারদের এই উপস্থিতি নিয়েও খুব একটা চিন্তিত ছিলেন না সরকারি দলের প্রার্থী কিংবা নির্বাচন কমিশন। কারণ, দুই শতাংশ ভোট হলেও এ নির্বাচন বৈধ হবে তার ঘোষণা সিইসি দিয়েছিলেন আগেই। তারপরও সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের ১২৩ কেন্দ্রগুলোতে ভোট হয়েছে, এসেওছিলেন যৎসামান্য ভোটার। এখন ভোট গণনা চলছে। আশা করা হচ্ছে ফল ঘোষণাও হবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই।
সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি গমীর উদ্দিন স্কুল ও কলেজ, মথুরাপাড়া বিকে উচ্চ বিদ্যালয়, আনিলা জাহান মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বড়ইকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যঅলয়, বিবিরপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, সারিয়াকান্দি বালক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কুড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দীঘলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভোটার উপস্থিতি কম। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে শুরু করেন। এতে কেন্দ্রে উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তবে উল্লেখযোগ্য ভোটার নজরে আসেনি।
মথুরাপাড়া বিকে উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, এ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৪৬২ জন। বেলা ৩টা পর্যন্ত ৩৬০ জন ভোট দেন।
বড়ইকান্দি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার প্রভাষক ছদরুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৩২০ জন। সকালের দিকে ভোটার উপস্থিতি ছিল ১০ শতাংশ। দুপুরে ভোটার উপস্থিতি বেশি হওয়ায় ৫০০ জন ভোট দেন। বেলা ১২টার দিকে পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫ শতাংশ ভোট পড়ে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রাসেল মিয়া জানান, দূর্যোগের কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হলেও কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
নৌকা মার্কার প্রার্থী সাহাদারা মান্নান শিল্পী জানান, সাংসদ আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে এ এলাকার মানুষের জীবনে দুর্যোগ নেমে এসেছে।
তাই যত বাধা আসুক এ এলাকার মানুষ মান্নানের স্মৃতি লালন করতে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে আসবেন এবং তিনি বিজয়ী হবেন।
আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তেমন একটা মাঠে দেখাই যায়নি।
সোনাতলার উপজেলার চমরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনাতলা পাইলট মডেল হাইস্কুল, সরকারি নাজির আকতার কলেজ, আগুনিয়াতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি কমছিল। অধিকাংশ কেন্দ্রে দুপুর পর্যন্ত গড়ে ৫০০ ভোট পড়েছে।
এদিকে, দুপুরে সরকারি নাজির আকতার কলেজ কেন্দ্রে জাল ভোট দেবার অপরাধে পুলিশ গড়ফতেপুর গ্রামের ফারুক শেখের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাহিম আহম্মেদকে (১৮) গ্রেফতার করে। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিষ্কৃতি হাগিদক তাকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া একই কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপরাধে গ্রেফতার অপর এক তরুণকে আদালত বিকাল পর্যন্ত রাখার নির্দেশ দেন।
সোনাতলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক ও পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা সাংবাদিকদের বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।