কোনও মেডিক্যাল কলেজের বারান্দা দিয়ে জীবনে একবার হেঁটে না গেলেও লক্ষ্মীপুর থেকে নোয়াখালী গিয়ে তিনি সেজে গুজে বসেছেন চেম্বার খুলে। নিজেকে কার্ডিওলোজি, মেডিসিন, নিউরো মেডিসিন, বক্ষব্যাধি, ডায়াবেটিস সব কিছুর বিশারদ হিসেবে দেখিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিয়মিত রোগী দেখতেন। নিয়মিত প্রেসক্রিপশন দিতেন রোগীদের। এমন অসংখ্য রোগী দেখা এক ডাক্তারের বাসায় মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) এসেছিল পুলিশ। তবে চিকিৎসা নিতে নয়, চিকিৎসকের সনদের খবর নিতে। তখনই ফাঁস হয়ে যায় তিনি একজন ভুয়া ডাক্তার। কামরুল হাসান (৩২) নামের এই ভুয়া ডাক্তার এখন হাজতে।
নোয়াখালী সদর উপজেলার হাসপাতাল সড়কের পাশে মাইজদী হাউজিং এস্টেট এলাকা থেকে তাকে আটক করেছে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ের তথ্যের ভিত্তিতে শহরের হাসপাতাল রোড এর পাশে মাইজদি হাউজিং এস্টেট এলাকায় ওই ডাক্তারের বাসায় অভিযান চালানো হয়।
আটককৃত ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার কামরুল হাসান (৩২) লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার হোসেন আহমদ এর ছেলে।
এনএসআই এর তথ্য অনুযায়ী, কামরুল হাসান দীর্ঘদিন থেকে মাইজদী শহরের মাতৃছায়া হাসপাতাল (প্রা.) লিমিটেডে স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন কার্ডিওলোজি (এসিসি), সিসিডি-বারডেম, সিএমইউ (বিটমির) ডিইউ, এমবিবিএস পিজিটি (মেডিসিন), নিউরো মেডিসিন, হৃদরোগ, বক্ষব্যাধি, বাতজ্বর, বাতব্যথা ও ডায়াবেটিস রোগে অভিজ্ঞ পরিচয় দিয়ে প্যাড ব্যবহার করে হাসাপাতালটির চেম্বারে রোগী দেখে আসছিলেন। তার বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়ার পর, এনএসআই এর তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে তিনি নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবীর হোসেন বলেন, এনএসআই এর তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পরে, জেলা সিভিল সার্জনের সহযোগিতায় সে ভুয়া ডাক্তার প্রমাণিত হয়।
তিনি আরও জানান, মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে, একই হাসপাতাল থেকে ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর আরেক ভুয়া ডাক্তার আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।