হবিগঞ্জের সুতাং নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বহু আগেই এর মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় ব্রিজটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন শতশত যানবাহন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছে। যেকোনও সময় ব্রিজ ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কর্তৃপক্ষ বলছে টেন্ডার হয়েছে, তবে করোনার কারণে কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদার।
জানা যায়, ঢাকা-সিলেট পুরনো আঞ্চলিক সড়কের সুতাং নদীর ওপর স্বাধীনতার আগে স্থাপন করা হয় ব্রিজটি। বহু বছর আগেই এর মেয়াদ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রিজের রেলিং ভেঙে গেছে। ব্রিজের মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। বড় যানবাহন চলাচল করার সময় ব্রিজটি কেঁপে ওঠে।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুতাং গ্রামের বাসিন্দা ও অসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আকবর আলী জানান, ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন আশপাশের প্রায় ১৫-২০টি গ্রামের হাজারো লোকজন ও শত শত যানবহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যে কোনও সময় ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়ে, বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
সদর উপজেলার সুতাং গ্রামের বাসিন্দা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক আজমল আলী বলেন, আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করি। যখন ব্রিজের মধ্যে গাড়ি ওঠে, তখন অনেক সময় সেটি কেঁপে ওঠে। যাত্রীরা অনেক সময় ভয়ে গাড়িতে উঠতে চায় না।
একই গ্রামের প্রবীণ আজমদ উল্লাহ বলেন, স্বাধীনতার আগে ব্রিজটি স্থাপন করা হয়। তখন পাকিস্তানি সেনারা ব্রিজটি ভাঙার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। তবে দিন দিন এটি দুর্বল হয়ে পড়ায় আমরা শঙ্কায় আছি, কখন জানি কি হয়। তাই সরকারের কাছে আকুল আবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন একটি নতুন ব্রিজ স্থাপন করা হয়।
স্থানীয় নুরপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, অত্র এলাকার প্রায় ২০টি গ্রামের লোকজন এ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করেন। ব্রিজটি নিয়ে আমরা অত্যন্ত বিপদে আছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি বড় ধরনের দুর্ঘটনায় আগেই যেন, সংস্কার বা নতুন একটি ব্রিজ স্থাপন করা হয়।
হবিগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাছির জানান, ৭২ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৩ মিটার প্রস্থ একটি ব্রিজের টেন্ডার ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। করোনার কারণে শ্রমিক সংকট থাকায় ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ব্রিজের পাশে বিকল্প রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তবে বন্যার কারণে বিকল্প রাস্তাটি তলিয়ে যায়। ২০২১ সালের মার্চের মধ্যেই ব্রিজের কাজ শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।