বান্দরবান লামা বন বিভাগের তৈন রেঞ্জে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের কাঠসহ গাছপালা মাত্র ৬২ লাখ টাকায় হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে। নিলামের আগে থেকেই প্রভাব বিস্তার করায় এই সিন্ডিকেটের ওপরে দাম বলার সুযোগ পাননি অপর নিলামকারীরা। এর বিনিময়ে তাদের মাঝে ২২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বণ্টন করে সবার মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ শোনা গেছে।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বান্দরবান লামা বন বিভাগের অধীনস্থ আলীকদমের তৈন রেঞ্জে এ ঘটনা ঘটে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, লামা বন বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন রেঞ্জ, স্টেশন, বিটে জব্দ হওয়া, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাছপালা ও বিভাগীয় পর্যায়ে আহরিত কাঠ এবং সামাজিক বনায়নের আওতায় সৃজিত ব্লকউড বাগানের মার্কিং করা গাছগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য গত জুন মাসে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, এ নিলামে অংশগ্রহণ করেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, কুতুব উদ্দিন সওদাগর, লামার মো. সেলিমসহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা পরস্পরের যোগসাজসে সিন্ডিকেট তৈরি করে নিলামের মাধ্যমে বনজসম্পদগুলো নিজেদের দখলে নেন। আর এ কাজে তাদের সহায়তা করেন বন বিভাগের রেঞ্জ ও বন কর্মকর্তা। সিন্ডিকেটটি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অর্ধেকেরও কম মূল্যে নিলামে কেনেন গাছগুলো। অথচ বাজার মূল্য অনুযায়ী এসব বনজসম্পদের মূল্য কয়েক কোটি টাকা। এতে রাষ্ট্র বিপুল অংকের রাজস্ব হারিয়েছে।
নিলামে এ বনজ সম্পদ গ্রহীতাদের একজন মো. সেলিম জানান, তারা কয়েকজন মিলে ৬২ লাখ টাকায় বনজসম্পদগুলো নিলামে কিনেছেন। দাম কমানো, রেঞ্জ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজসের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
নিলামে অংশ নিয়ে এসব বনজ সম্পদ কেনা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা জহির উদ্দিন মিনার জানান, সামাজিক বনায়নের গাছ ও বিভাগীয় পর্যায়ে আহরিত, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং জব্দকৃত কাঠগুলো তার দফতরে নিলাম হয়েছে। সরকারি মূল্যের ওপরে দাম বলায় সর্বোচ্চ দরদাতাদের কাছে বিধি মোতাবেক গাছগুলো নিলাম বিক্রি করা হয়েছে। মানুষ কেন নিলাম নিয়ে অভিযোগ তুলছে এবং এসব মন্তব্য করছে তা আমার জানা নেই।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়সার দাবি করেন, নিলামকালে কেউ প্রভাব বিস্তার করেনি। এখন পর্যন্ত কত লাখ টাকার নিলাম হয়েছে তার হিসাব করা হয়নি।
এদিকে, চোখ রাঙানির কারণে নিলামে দাম বলতে না পারার কারণে অনেকে আর্থিকভাবে সুবিধা পাওয়ার কথা জানালেও প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।