X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিহ্নমেলায় বক্তারা

প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ নিজ কর্মের দ্বারা শ্রেষ্ঠ

সিরাজুচ ছালেকীন, রাবি
০৭ মার্চ ২০১৬, ১৯:০৪আপডেট : ০৭ মার্চ ২০১৬, ১৯:১৬

‘বাঙালি জাতি নদীর স্রোতের মতো প্রবহমান। এর প্রবাহে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন অবদান রেখেছেন। প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ কর্মের দ্বারা শ্রেষ্ঠ। এই প্রবাহে কোনও বিন্দুকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্দিষ্ট করলে সেখানে জাতির প্রবাহ থেমে যায়। তাই স্থির বিন্দুতে থেমে যাওয়া অনুচিত। বাঙালিদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের কারও সঙ্গে কারও তুলনা চলে না।'

রাজশাহীতে চিহ্নমেলার উদ্বোধন

সোমবার বেলা ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য পত্রিকা চিহ্ন আয়োজিত ‘চিহ্নমেলা বিশ্ববাঙলা-২০১৬’ তে ‘বাঙালির চোখে শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ শীর্ষক আড্ডায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের সঞ্চালনায় আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমেরিটাস আনিসুজ্জামান, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা, পশ্চিমবঙ্গের লেখক ইমানুল হক, কবি জুলফিকার মতিন, রাজশাহী কবিকুঞ্জের সভাপতি রুহুল আমিন প্রামাণিক। সঞ্চালনা করেন কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।

আড্ডায় রাজা রামমোহন রায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই পাঁচজন মহান বাঙালিকে নিয়ে আলোচনা হয়।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘পাঁচজন থেকে যদি দুইজনে আসি—তাহলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উল্লেখ করতে হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালিকে বিশ্বজনীনতার দিকে নিয়ে গেছেন। বাঙালির সমাজে নানা সমস্যার সমাধানে আজও আমরা রবীন্দ্রনাথকে খুঁজে পাই। আর বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে সচেতন করেছেন। মুক্তিসংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্রের স্থপতি। অন্যরাও নিজের সময়ে অনেক অবদান রেখেছেন।’

সনৎকুমার কুমার সাহা বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ বাঙালি বিষয়টা নির্ধারণ করা আমার কাছে বিভ্রান্তিকর। শ্রেষ্ঠ হিসেবে কোন জায়গাতে আমাদের ভাবনাকে নিবদ্ধ করতে চাই—এটা একটা গোলামালের ব্যাপার। বাঙালি জাতি একদিনের নয়। এর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জন অবদান রেখেছেন। তারা সবাই সম্মানীয় ও গ্রহণযোগ্য। এখানে বিদ্যাসাগরের সঙ্গে রামমোহনের বা অন্য কারও সঙ্গে কারোর তুলনা অবান্তর।

লেখক ইমানুল হক বলেন, ‘শ্রেষ্ঠত্বের মধ্যে একটা আধিপত্যবাদের বিষয় থাকে। তাই শ্রেষ্ঠ বাঙালি কে এ নিয়ে তুলনায় যাওয়া ঠিক নয়। আজ আলোচিত পাঁচজনের বাইরেও অনেকে আছেন যার বাঙালি জাতির বিকাশে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছেন।’

চিহ্নমেলার আলোচনা সভায় বক্তারা

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, বাঙালিকে অধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ অবদান রেখেছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বাঙালির রাজনৈতিক মুক্তিতে কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেন, বাঙালির জাতির চলার পথে বিভিন্ন বাঁক বদল হয়েছে। আর বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন জন অবদান রেখেছেন।

এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে দুই দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, শিক্ষাবিদ সনৎকুমার সাহা প্রমুখ। উদ্বোধন শেষে সেখান থেকে লেখক-পাঠক ও সম্পাদকদের নিয়ে একটি শোভাযাত্রা ক্যম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুণরায় সেখানে গিয়ে শেষ হয়। পরে ১১টায় ‘বাঙালির চোখে শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ শীর্ষক আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া প্রথম দিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে বিকেল ৩টায় স্বননের সাত মার্চের কবিতা আবৃত্তি, ৪টায় লেখক-পাঠক ও সম্পাদকদের শিরোনামহীন আড্ডা, বিকেল সাড়ে পাঁচ টায় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ-১ এবং সন্ধ্যা সাড়ে সাত টায় গান-আড্ডা।

মেলার দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় কথাপ্রসঙ্গে : লেখক-সম্পাদকদের অভিব্যক্তি, বেলা সাড়ে ১২টায় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ-২, ৩টায় কবিতা পাঠ-২, ৪টায় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ-৩, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চিহ্ন পুরস্কার ও ছোটকাগজ সম্মাননা-২০১৬ প্রদান করা হবে।

এ মেলাতে সাহিত্যের সৃজনশীল ও মননশীল শ্রেণিতে দুজন সাহিত্যিককে চিহ্ন পুরস্কার ও ছোটকাগজ সম্মাননা-২০১৬ প্রদান করা হবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ও ভারতের ৭টি ছোটকাগজকে চিহ্ন ছোটকাগজ সম্মাননা প্রদান করা হবে।

দুইদিনব্যাপী এ মেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় দেশ-বিদেশের ১১০টি ছোট কাগজের স্টল রয়েছে। এর আগে দুইবার ২০১১ সালে ও ২০১৩ সালে এ মেলার আয়োজন করা হয়। সাহিত্য পত্রিকা চিহ্ন ২০০০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। লেখালেখি ছাড়াও এখানে ধারাবাহিক পাঠচক্র, রবিবারের আড্ডা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। গত ১৬ বছরে চিহ্ন ৩০ টি সংখ্যা বের করেছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির বই মেলাতে চিহ্ন’র ৩০তম সংখ্যা বের করা হয়।

/টিএন/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মুক্তি পাওয়া আসামির প্রবেশন মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন, অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
মুক্তি পাওয়া আসামির প্রবেশন মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন, অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
মতিঝিলে ফুটপাত থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
মতিঝিলে ফুটপাত থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি: প্রধানমন্ত্রী
খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি: প্রধানমন্ত্রী
মননের প্রথম আইএম নর্ম, হাতছানি জিএম নর্মের
মননের প্রথম আইএম নর্ম, হাতছানি জিএম নর্মের
সর্বাধিক পঠিত
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও