৫ দফা দাবিতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সোমবার ভোর ৬টা থেকে এ অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকলে এ ধর্মঘট শুরু হয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ- নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের আহবানে শ্রমিকরা ভোর ৬টা থেকে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে ধর্মঘট পালন শুরু করেন। আগামীকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিরও ঘোষণা দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে পাট শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে অবিলম্বে মিলগুলোতে পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়, পে-কমিশনের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পে শ্রমিকদের জন্য মজুরি কমিশন বোর্ড গঠন, ১ জুলাই ২০১৩ ঘোষিত ২০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিল জাতীয়করণ এবং কর্ণফুলী জুট মিলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণসহ পাওনা পরিশোধ।
এসব দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জুট মিল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচির ৪র্থ দিনে সোমবার ভোর ৬ টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়।
সোমবারের ধর্মঘট কর্মসূচির অংশ হিসাবে খালিশপুর, আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার শ্রমিকরা ভোর ৬ টায় মিল গেটগুলোর সামনে সমবেত হয়। পরে প্রতিটি মিল গেটে পৃথকভাবে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মঘট চলাকালে ক্রিসেন্ট মিল গেটে ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহবায়ক মো. সোহরাব হোসেন, সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক মো. শাহ আলম, সিবিএর সভাপতি মো. দ্বীন ইসলাম, ইউনুস হাওলাদার, জাহিদ হোসেন জাহাঙ্গীর, চান মিয়া সেলিম ও ইসমাইল হোসেন, প্লাটিনাম মিল গেটে সিবিএ সভাপতি কাওসার আলী মৃধা, সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান, সাবেক সভাপতি নুরুল হক, সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা আবুল কালাম জিয়া, আশরাফ হোসেন, রুস্তম আলী, মো. শাহ আলম, মনির হোসেন ও বেল্লল হোসেন, দিঘলিয়া ষ্টার মিল গেটে সিবিএ সভাপতি মো. বেল্লাল মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক আ. মান্নান, বেলায়েত হোসেন ও আবু হানিফ, আলীম জুট মিল গেটে সিবিএ সভাপতি আ. সালাম, সাধারণ সম্পাদক আ. রশীদ, মুজিবর রহমান ও মকবুল হোসেন, ইস্টার্ন জুট মিল গেটে সিবিএ সভাপতি মো. আলাউদ্দীন, এস এম জাকির হোসেন, তবিবর রহমান, আলমগীর হোসেন, সিরাজুল ইসলাম ও লিয়াকত হোসেন, যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রির জেজেআই গেটে সিবিএ সভাপতি আহসান উল্লা, সিবিএ সাধারণ সম্পাদক হারুন আর রশিদ মল্লিক, আলতাফ হোসেন ও আইয়ুব আলী, কার্পেটিং জুট মিল গেটে সিবিএ সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম লাল, সহ-সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
বক্তারা অবিলম্বে সব পাওনা পরিশোধসহ ৫ দফা বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবি জানান এবং এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। শ্রমিক সমাবেশ থেকে মঙ্গলবার ভোর থেকে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহবায়ক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, গত পাট মৌসুমে অর্থ বরাদ্দ না দেয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রায় ৮৫ হাজার শ্রমজীবী মানুষকে অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
আলীম মিলের সিবিএ সভাপতি আ.সালাম বলেন, ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ অর্থ বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা অল্প খরচে লক্ষ্যমাত্রা উৎপাদন দিতে সক্ষম হয়েছে। যে কারণে তখন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন লাভজনক স্থানে পৌঁছায়। অবিলম্বে শ্রমিক-কর্মচারীদের সব পাওনা পরিশোধের জন্য বিজেএমসি কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর আহবান জানান তিনি।
/টিএন/