হবিগঞ্জের বাহুবলে চাঞ্চল্যকর চার শিশু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে নয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ দিন তদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আলমের আদালতে প্রধান অভিযুক্ত পঞ্চায়েত নেতা আব্দুল আলীকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তাদির আলম।
অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন আব্দুল আলীর দুই ছেলে রুবেল মিয়া ও জুয়েল মিয়া, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আরজু মিয়া, শাহেদ মিয়া, বশির মিয়া, বেলাল মিয়া, উস্তার মিয়া, সিএনজি অটোরিকশাচালক বাচ্চু মিয়া। এদের মধ্যে পাঁচজন গ্রেফতার, তিনজন পলাতক এবং র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অটোরিকশাচালক বাচ্চু মিয়া নিহত হয়েছেন। এছাড়া আটক সালেহ উদ্দিনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি জেলার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাঈল হোসেন (১০) খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পাঁচদিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রামের পাশ্ববর্তী স্থানে চার শিশুর মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দেশে, বিদেশে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনার পরপরই প্রধান অভিযুক্ত আব্দুল আলীসহ সাতজনকে আটক করে এবং ঘটনার অন্যতম আসামী বাচ্চু মিয়া র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আব্দুল আলীর দুই ছেলে এবং আরজু মিয়া ও শাহেদ মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এরপর পুলিশের গাফলতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি দুইদফা সময় বর্ধিত করে অবশেষে ৬ মার্চ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বাহুবল থানার এসআই জিয়াউদ্দিনকে বরখাস্ত ও ওসি তদন্ত আব্দুল রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আজ মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এই আলোচিত হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট দাখিল করেন।
/বিটি/