‘গরিব মাইনষের জন্য গরুর মাংস না। প্রশাসন থাকি কম দামে বিক্রির ব্যবস্থা করি সবার জন্য ভালো হইছে। আইজ তিন মাস পর গরুর মাংস কিনলাম। আলু-টালু মিশাল দিয়া অন্তত তিনবেলা খামু।’
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক সমন্বয়কৃত মূল্যে গরুর মাংস কিনে এভাবেই নিজের অনুভূতি জানালেন সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঘনেশ্যামপুর গ্রামের দিনমজুর আবুল হোসেন। শনিবার (৫ এপ্রিল) যাত্রাপুর হাটে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ৬০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। এতে আবুল হোসেনের মতো অনেক দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষ অনেকদিন পর মাংস কেনার সুযোগ পান।
জেলা প্রশাসন জানায়, রমজান মাস উপলক্ষে নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে গরুর মাংস প্রাপ্তির ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। এদিন যাত্রাপুর ইউনিয়নের ২০০ নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে এসব মাংস বিক্রি করা হয়।
সুবিধাভোগীরা বলছেন, বাজারে গরুর মাংস ৭২০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। নিম্নআয়ের মানুষের পক্ষে গরুর মাংস কেনা সম্ভব হয় হয়ে ওঠে না। স্থানীয় প্রশাসনের আয়োজনে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে গরুর মাংস কিনতে পেরে তারা খুশি। তবে দাম ৫০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
দিনমজুর আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা যে রোজগার করি তাতে গরুর মাংস আমাদের জন্য না। আইজ একটু কম দামে কেনার সুযোগ পাইছি। তবে ৫০০ টাকা কেজি হইলে আমাদের জন্য ভালো হয়।’
আরেক ক্রেতা রেজাউল বলেন, ‘দিনমজুরি দিয়ে প্রতিদিন আয় হয় ৪০০ থাকি ৫০০ টাকা। গরুর মাংস কিনি কেমন করি। তারপরও আইজ একটু কম দাম পাওয়ায় কিনছি। মাঝেমধ্যে এমন সুযোগ দিলে অনেকের উপকার হইবে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুসফিকুল আলম হালিম জেলা প্রশাসনের পক্ষে সুবিধাভোগীদের মাঝে সমন্বয়কৃত মূল্যে মাংস বিক্রির ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ফিজানুর রহমান, যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা মাংস বিক্রি তদারকি করেন।
ইউএনও মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, ‘গরুর মাংসের মূল্য বেশি হওয়ায় নিম্নআয়ের মানুষ কিনতে পারেন না। এজন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিম্নআয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে ৬০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা জেলা প্রশাসন থেকে সমন্বয় করা হয়েছে।’
‘আমরা ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলের মানুষকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করেছি। শনিবার যাত্রাপুর হাট ছিল। হাটে আগত চরাঞ্চলের মানুষ এই সমন্বয়কৃত মূল্যে মাংস পেয়ে খুশি হয়েছেন। মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ছিল। পরবর্তীতে আবারও এমন উদ্যোগ নেওয়া যায় কিনা আমরা সেটা বিবেচনায় রেখেছি’ যোগ করেন ইউএনও।