X
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রমজানে নেই কাজ, নিত্যপণ্যের বাজারে দিনমজুরদের কপালে চিন্তার ভাঁজ

তানভীর আহমেদ, সুনামগঞ্জ
২১ মার্চ ২০২৪, ১০:০২আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪, ১০:১২

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাতটা। সূর্যের আলো সেভাবে ফোটেনি। কিন্তু তাতে কী! ঝড় কিংবা বৃষ্টি যা-ই থাকুক তা মাথায় নিয়ে শ্রম বিক্রি করতে প্রতিদিন ভোরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কালীবাড়ি পয়েন্টে হাজির হন শ্রমজীবী মানুষেরা। এই সময় বিকিকিনি চলে মানুষের শ্রম।

শ্রমজীবী মানুষেরা শহরের আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই বসে থাকেন শ্রম বিক্রির আশায়। ভাগ্য ভালো থাকলে কোনও ক্রেতা এসে দরদাম করে কিনে নিয়ে যান। পবিত্র রমজান মাস চলমান থাকায় অনেকসময় ক্রেতা না পেয়ে খালি হাতেই ফিরে যেতে হয় ঘরে। বিভিন্ন বয়সী শুধু পুরুষ নন, নারীরাও ঠিক এভাবে নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন এই পয়েন্টে।

বুধবার (২০ মার্চ) সকালে সরেজমিনে গেখা গেছে, মাত্র ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে আস্ত একজন ‘জলজ্যান্ত মানুষ’। পছন্দমতো বেছে নেওয়া যাবে নারী কিংবা পুরুষ। আধুনিক যুগে এমন কথা অবাস্তব মনে হলেও সুনামগঞ্জের কালীবাড়ি পয়েন্ট এলাকায় প্রতিনিয়ত সরাসরি মানুষ নন, বিক্রি হয় মূলত তাদের শ্রম। ক্রেতারা এসে দর-কষাকষি করে এসব মানুষকে কাজ করানোর জন্য নিয়ে যান কর্মক্ষেত্রে।

হাটে ক্রেতার আশায় দাঁড়িয়ে থাকা অঞ্জন দাস বলেন, ‘সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এইখানে আসি। কোনও দিন কাজ মেলে, কোনও দিন মেলে না। তা ছাড়া এখন রমজান মাস চলছে। কাজের পরিমাণ অনেক কম। কোনও দিন ৩৫০ টাকায় আবার কোনও দিন ৪০০ টাকায় সারা দিন কাজ করতে হয়। এই টাকায় কি সংসার চলে? পরিবারে ৫ জন মানুষ আছে। দিন দিন এদের ভরণপোষণ করা কষ্টকর হচ্ছে।’

অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আমাদের মতো দিনমজুরদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে জিনিসপত্রের দাম। অনেকসময় পানি দিয়া ভাত খাওয়া লাগে, মাছ-মাংস কিনে খাওয়া আমাগোর জন্য বিলাসিতা। গরিবের কষ্টের খোঁজ কেউ রাখে না।’

সকাল থেকে কাজের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা রোজিনা বেগম বলেন, ‘অভাবের সংসার, কাজ না করলে খাওন পাইতাম কই থাকি? তাই আমরা প্রতিদিনই কাজ করি। মূলত বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয়। না করলে পেট চলবে কী করে? ভীষণ কষ্ট হয়! তারপর আবার নারীদের দাম নাই। পুরুষের থেকে ১০০-১৫০ টাকা কমে কাজ করা লাগে। আবার অনেকসময় কাজ না পাইলে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হয়।’

দীর্ঘদিন যাবৎ এই পেশায় জড়িত রয়েছেন আব্দুস শহীদ মিয়া। পরিবারে ২ ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। তিনি তার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘ফজরের আজান দেওয়ার সাথে সাথে ঘুম ভেঙে যায়। তারপর হাতমুখ ধুয়ে আস্তে আস্তে ওয়েজখালি থেকে হেঁটে হেঁটে এইখানে আসি। কাজ করার জন্য নিয়মিত আসতে হয়। অনেকসময় দেখা যায় মানুষ বেশি হই গেলে দাম কমি যায়। মাঝে মাঝে ২৫০-৩০০ টাকায়ও কাজে যেতে হয়। আবার অনেকসময় কাজ মেলে না। আবার দেখা যায় এক কাজের কথা বলে নিয়ে গিয়ে অন্য কাজ করায়। খুব কষ্টে আছি আমরা।’

/কেএইচটি/
সম্পর্কিত
ট্রেন ছাড়ছে না সময়মতো, যাত্রীদের ভোগান্তি
শহর থেকে গ্রামে ফেরা মানুষের সংখ্যা দুই বছরে দ্বিগুণ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
সর্বশেষ খবর
মামার বাসা থেকে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
মামার বাসা থেকে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
আরও কোটি কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র পেতে যাচ্ছে ইসরায়েল?
আরও কোটি কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র পেতে যাচ্ছে ইসরায়েল?
একই গ্রাম থেকে নির্বাচিত হলেন তিন চেয়ারম্যান
একই গ্রাম থেকে নির্বাচিত হলেন তিন চেয়ারম্যান
ইউরোপা লিগে আতালান্তার ইতিহাস, লেভারকুসেনের রেকর্ড
ইউরোপা লিগে আতালান্তার ইতিহাস, লেভারকুসেনের রেকর্ড
সর্বাধিক পঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
আর্জেন্টাইন ক্লাবকে জামাল ভূঁইয়ার ২ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ ফিফার
আর্জেন্টাইন ক্লাবকে জামাল ভূঁইয়ার ২ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ ফিফার
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় আহত পাইলটের মৃত্যু
চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় আহত পাইলটের মৃত্যু
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের