চলচ্চিত্র আর সংগীতের সমন্বিত উৎসবের কারণে ইতোমধ্যে পূর্ব আফ্রিকার প্রধান সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয়েছে তানজিনিয়ার জানজিবার ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। এবারের থিম ‘দিস জার্নি অব আওয়ার্স’।
জানজিবারের স্টোন টাউনে আগামী ৯ থেকে ১৭ জুলাই এটি অনুষ্ঠিত হবে। আর এতে প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশের আলোচিত চলচ্চিত্র ‘মাই বাইসাইকেল’। এটি চাকমা ভাষায় নির্মিত প্রথম কোনও চলচ্চিত্র। এর নাম ‘মর থেংগারি’, যা ইংরেজিতে ‘মাই বাইসাইকেল’।
উৎসবের ‘ফিচার ফিকশন’ বিভাগে প্রদর্শনের জন্য এটি অফিসিয়ালি মনোনিত হয়েছে। বাংলা ট্রিবিউনকে এমনটাই নিশ্চিত করেছেন পরিচালক অং রাখাইন। উৎসবের ওয়েবসাইটেও মিলেছে এই তথ্য। উচ্ছ্বসিত অং বলেন, ‘সেন্সর কেন্দ্রিক অনেক বেদনার পরেও এটা খুবই আনন্দের খবর আমাদের জন্য। আমার খুব ইচ্ছে নিজেই সরাসরি উৎসবে অংশ নিতে। জানি না যেতে পারবো কিনা। কারণ যাওয়া আসার সঙ্গে অর্থনৈতিক বিষয়টাও জড়িত। তবে আমি যেতে পারি আর না পারি- ছবিটা তো প্রদর্শিত হচ্ছে। এটাই বড় সুখ। উৎসব সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
অস্পষ্ট কারণে সেন্সর জটিলতার দায়ে বাংলাদেশে এই চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিক ভাবে মুক্তি দেওয়া না গেলেও ২০১৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১৩তম বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও উন্মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবে এটি প্রথম প্রদর্শিত হয়। তখন বেশ প্রশংসিত হয়। গত বছর নভেম্বরে এটি প্রদর্শিত হয় ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়ার তাল্লিন ব্ল্যাক নাইট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। ডিসেম্বরে রাশিয়ার সিলভার আকবুজাত অ্যাথনিক ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এটি সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার লাভ করে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুইডেনের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র উৎসব ৩৯তম গোটেবার্গ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও প্রশংসিত হয় এর গল্প ও নির্মাণ শৈলী।
‘মাই বাইসাইকেল’-এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কামাল মনি চাকমা, ইন্দ্রিরা চাকমা, ইউ চিং হলা রাখাইন, বিনাই কান্তি চাকমা, আনন্দ চাকমা, সুভাষ চাকমা, জোরাদান চাকমা। ছবির গল্প পরিচালকের নিজের। চিত্রনাট্য করেছেন নাসিফুল ওয়ালিদ। প্রযোজনা করেছেন মা নান খিং। ছবিটির পরিবেশক খনা টকিজ।
ছবিটির গল্প প্রসঙ্গে অং রাখাইন বলেন, ‘কামাল নামে একজন যুবক শহরে টিকতে না পেরে বাড়িতে ফিরে আসেন একটি বাইসাইকেল হাতে নিয়ে। যে সাইকেল দিয়ে একসময় এলাকায় মানুষসহ মালামাল পরিবহন শুরু করেন। আর তাতে তার সংসার ও ছেলের পড়ার খরচ চলতে থাকে। কিন্তু তার এই স্বচ্ছলতা অন্যদের সহ্য হয় না। তিনি ষড়যন্ত্রের স্বীকার হন। এখান থেকেই শুরু হয়ে ছবির আসল গল্প। যা না দেখলে বলে বোঝানো সম্ভব না।’
ট্রেলার:
/এস/এমএম/
আরও পড়ুন:
# সেনাবাহিনীর আপত্তিতে আটকে গেল ‘মাই বাইসাইকেল’?
# গোটেবার্গ চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মাই বাইসাইকেল’
# প্রথমবারের মতো পুরস্কার পাচ্ছে 'মাই বাইসাইকেল'
# নির্মাতা যখন মডেল