X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
অনুদান নিয়ে গড়িমসি

মামলা হচ্ছে জাকী, নারগিস, টোকনসহ ৫ নির্মাতার বিরুদ্ধে

মাহমুদ মানজুর
১৯ জুলাই ২০১৬, ১২:১০আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৬, ১৭:০৪

সরকারি অনুদান পেতে চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকে আকাশ ছুঁই। অভিযোগ ওঠে নানা তদবির আর স্বজনপ্রীতির। অন্যদিকে অনুদান পাওয়ার পর ততোধিক গড়িমসি লক্ষ্য করা যায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। অনেক বছর ধরেই এসব অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে।

বাড়ছে শিল্প-সংস্কৃতি বাজেট। তবে সেই নিয়ম-ভাঙার অনিয়মে এবার টান পড়ছে। অনুদান নিয়ে বছরের পর বছর ছবি না নির্মাণের দায়ে প্রাথমিকভাবে পাঁচ নির্মাতার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগের একাধিক সূত্র।

সূত্র জানায়, অনেক বছর ধরে সরকারের অনুদান পাওয়া বেশিরভাগ চলচ্চিত্র সঠিক সময়ে নির্মাণ হচ্ছে না। অনুদান পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চলচ্চিত্র জমা ও মুক্তি দেওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ পরিচালক তা করছেন না। উল্টো নানা অজুহাতে বছরের পর পর বছর পার করে দিচ্ছেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে গত নয় বছরে ৪০টির বেশি চলচ্চিত্র নির্মাণের লক্ষ্যে অনুদান দেওয়া হলেও মুক্তি পেয়েছে মাত্র ১৫টি! যা তথ্য মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে বলেও মনে করেন এই বিভাগের কর্তারা।

তাই অনুদান হাতে নিয়ে আর কোনও গড়িমসি করার সুযোগ পাচ্ছেন না নির্মাতারা। অনুদান পাওয়ার পর গত কয়েক বছর নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ শেষ না করা এবং ছবি জমা না দেওয়ার কারণে এবার পাঁচ পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে তথ্য মন্ত্রণালয়। সরকারের পক্ষে তথ্যসচিব বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করবেন। ইতোমধ্যেই মামলার সব কাগজপত্র জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, অভিযুক্ত পাঁচ পরিচালক হলেন- ‘নেকড়ে অরণ্য’ ছবির জন্য ২০১১-১২ অর্থবছরে অনুদানপ্রাপ্ত পরিচালক মারুফ হাসান আরমান, একই অর্থবছরে ‘একা একা’ চলচ্চিত্রের জন্য সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ‘যৈবতী কন্যার মন’ চলচ্চিত্রের জন্য নারগিস আক্তার, একই অর্থবছরে ‘খাঁচা’ চলচ্চিত্রের জন্য খান শরফুদ্দীন মোহাম্মদ আকরাম ও ‘কাঁটা’ চলচ্চিত্রের জন্য টোকন ঠাকুর।

এরমধ্যে মারুফ হোসেন আরমানের বিরুদ্ধে ১৩,৭৮,৪৬৩ টাকা, সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকীর বিরুদ্ধে ১৩,৭৬,৮২২ টাকা, নারগিস আক্তারের বিরুদ্ধে ২৪,৮৬,০৪১ টাকা, খান শরফুদ্দীন মোহাম্মদ আকরামের বিরুদ্ধে ২৪,২৫,১৫৬ টাকা ও টোকন ঠাকুরের বিরুদ্ধে ১৩,০৪,৯৪৭ টাকার পিডিআর অ্যাক্ট অনুযায়ী সার্টিফিকেট মামলার প্রস্তুতি চলছে এখন।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিএন নাজমুল হোসেন খান মঙ্গলবার দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি আমরা। এটা নিশ্চিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে তাদের আমরা একাধিকবার চিঠি দিয়েও জানিয়েছি, তাদের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর পাইনি। এখন আমরা বাধ্য হয়েই আইনি প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি।’

এদিকে উপসচিব আরও জানান, শুধু এই পাঁচ নির্মাতার বিরুদ্ধেই মামলা করে থামছে না মন্ত্রণালয়। বরং এর মাধ্যমেই এ পদক্ষেপের শুরু হলো। এ পর্যন্ত যারাই অনুদান পেয়ে চলচ্চিত্র সঠিক সময়ে জমা দেননি তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে দেশের অন্যতম চলচ্চিত্র পরিচালক সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেখুন আমার শরীর অসুস্থ ছিল। সে জন্যই ছবিটি শেষ করতে সময় লাগছে। যেটা আমি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তারাও আমাকে সময় দিয়েছে। বরাবরই তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেয়েছি। আশা করছি শিগগিরই ছবিটি শেষ করে ফেলবো।’

অন্যদিকে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায় আরেক অভিযুক্ত পরিচালক নারগিস আক্তারের। আর টোকন ঠাকুর ফোন রিসিভ করেননি। 

প্রসঙ্গত, আইন রয়েছে অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র অনুদানের প্রথম চেকপ্রাপ্তির ৯ মাসের মধ্যে ছবি নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। তবে বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনুরোধ সাপেক্ষে পরিচালক ওই সময় কিছুটা বৃদ্ধি করতে পারেন। মূলত এই ‘বিশেষ অবস্থা’র সূত্র ধরেই অনুদানের ছবি বছরের পর বছর পড়ে থাকে নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রের তালিকায়।

/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা