আজ ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকাই ছবির অমর নায়ক সালমান শাহর ৪৫তম জন্মবার্ষিকী। তার চার বছরের ছোট্ট ক্যারিয়ারের সিংগভাগ জুড়েই ছিলেন চিত্রনায়িকা শাবনূর। ২৭টি ছবির মধ্যে ১৪টিতেই নায়িকা হিসেবে ছিলেন শাবনূর। পর্দার বাইরেও ৯০ দশকের সর্বোচ্চ সফল এই জুটিকে নিয়ে গল্প-গুঞ্জনের কমতি ছিলো না মিডিয়ায়। সালমান শাহর জন্মদিনের বিশেষ আয়োজনে জেনে নিন শাবনূরের লেখা স্মৃতিকথা-
‘তুমি আমার’ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে সালমানের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। যদিও দেখা হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু চেনাজানাটা ভালোভাবে হয়েছে এই ছবির শুটিংয়ের সময়। এর আগে তো সালমান অভিনয় করতো মৌসুমী আপুর সঙ্গে।
প্রথম দেখার অনুভূতিটা অন্যরকম। আমি তখন ছোট ছিলাম। সবকিছুই খেলার ছলে দেখেছি। সালমান আমার খুব প্রিয় ছিল। কারণও ছিল একটা। আমি বহুবার এই কথাটা বলেছি যে, সালমান আমাকে পিচ্চি বলে ডাকতো। ও বলতো, ‘আমার তো কোনও বোন নেই, এই পিচ্চি তুই আমার বোন হবি? তুই আমার ছোট বোন।’
সালমানের মতো বড় মাপের মানুষ আমি অনেক কমই দেখেছি। আর সহশিল্পী হিসেবে ও ছিল এককথায় অসাধারণ। এমনও অনেকদিন গেছে, যখন আমার কোনও জায়গায় ভুল হচ্ছে, ও তখন বলে দি, এভাবে করে নিবি। নাচ করার ক্ষেত্রেও একইরকম হত। ওর সঙ্গে পেরে উঠে পারতাম না।
মাঝে মাঝে ভাবি, সালমান যদি বেঁচে থাকতো, তাহলে আমাদের জুটিটাও উত্তম-সুচিত্রার মতো হতো। কারণ আমাদের বোঝাপড়াটা অনেক ভাল ছিল। আমাদের জুটিটাও দর্শক গ্রহণ করেছিল। আর সালমান অনেকটা ন্যাচারাল অভিনয় করতো। ও কীভাবে সংলাপ বলছে- তা আমি খেয়াল করতাম। সেটা নিয়ে ভাবতাম। বলা যায়, ওকে দেখে দেখেই আমি পরিপক্ক হয়েছি।
শুটিংয়ের মাঝে আমি আর সালমান প্রচুর দুষ্টুমি করতাম। ও অনেক মজার মানুষ ছিল। মজা করতে করতে কীভাবে যে শুটিং শেষ হয়ে যেত, টেরই পেতাম না। আর সবার সঙ্গেই ও বন্ধুর মতোই ছিল।
আরেকটা কথা বলতে চাই, সেটা হচ্ছে, সবাই কিন্তু সামিরাকে (সালমানের স্ত্রী) দোষ দেয়। এটা কিন্তু ঠিক না। সামিরা অনেক ভালো মানুষ। সামিরার সঙ্গে আমারও বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আমরা সবাই মিলে প্রচুর আড্ডা দিতাম।
সবশেষ বলবো, সালমান তুমি আমাদেরকে ঠকিয়ে এভাবে পরপারে চলে যাবে, তা কখনওই ভাবিনি। একবার বলারও প্রয়োজন মনে করলে না!
ভালো থেকো! জন্মদিনের শুভেচ্ছা নিও!
লেখাটি ঢুলি কমিউনিকেশনস প্রকাশনা থেকে সংগ্রহীত।
/এমএম/
