X
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুধু ‘আয়না’র নয়, এই ‘বাজি’টা সবার

শেরিফ আল সায়ার
০৪ অক্টোবর ২০১৬, ১৫:০৮আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০১৬, ২০:২৯

আয়নাকে নিয়ে অমিতাভ-নাবিলার বাজি! আমাদের চলচ্চিত্রে গল্পের হাহাকার বেশ পুরনো। সবই প্রায় ঠিকঠাক, শুধু গল্প বলার ঢংটা মার খায় বারবার। ফল, টিকিট কেটে যে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ঢুকেছে, আড়াই ঘণ্টা পর সেই মানুষটি বাড়ি ফিরে অতৃপ্ত মন নিয়ে।

কারণ, দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা লক্ষ-কোটি গল্প, অথচ আমাদের চলচ্চিত্র কাট-কপি-পেস্ট যন্ত্রণা থেকে সহজেই বের হতে পারছিল না। ঠিক এই সময়েই ‘আয়নাবাজি’ নামে এক সিনেমা নির্মাণে মন দিলেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী।
গল্পটা লিখে দিয়েছেন গাউসুল আলম শাওন। চিত্রনাট্যেও ছিলেন তিনি, সঙ্গে অনম বিশ্বাস। দীর্ঘ সময়ের বন্ধু অমিতাভ রেজা’র হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছিল মূল চরিত্র আয়নার যতসব ভেলকিবাজি রূপালি পর্দায় তুলে আনার দায়িত্ব।
প্রশ্ন হলো, সদরঘাটের পাড় ঘেঁষে বসবাস করা জীবন সংগ্রামের যোদ্ধা আয়নার আয়নাবাজি’র গল্প কি জয় করতে পেরেছে দর্শকের মন?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
গল্পের গভীরতা:
গল্প বলার ঢং আছে। সেটা পর্দায় তুলে আনারও আলাদা ভঙ্গি আছে এতে। এ দুটো বিষয়েই পটু অমিতাভ রেজা। নিজস্ব দৃষ্টিকে সুনিপুণভাবে এতদিন পর্দায় তুলে এনেছিলেন বিজ্ঞাপনের জন্য। সেসব বিজ্ঞাপন এবং কখনও কখনও তার নির্মিত নাটকের জন্য দর্শক হৃদয়ে একটা আস্থার জায়গাও তৈরি করেছেন অমিতাভ রেজা। সেই অমিতাভের হাতে যখন ‘আয়নাবাজি’র গল্প- তখন আসলে সেই ঢংটা পর্দায় তুলতে পেরেছেন তো অমিতাভ রেজা? হ্যাঁ, ছবিটি দেখার পর নিশ্চিতভাবেই বলা যায়- গল্প যতটা দুর্দান্ত তার চেয়েও বড় অপ্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে উঠছেন অমিতাভের চোখ।
এই লেখায় গল্পটা হুবহু বলে দেওয়া জরুরি নয় বটে। তবুও দর্শকের আগ্রহের কিঞ্চিৎ বিঘ্ন ঘটাবে না যদি আমি বলে দেই এই গল্পে চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করেছে মোট ৬টি চরিত্রে। ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রগুলো যেভাবে খেলেছে পুরো গল্পে সে সম্পর্কে বলতে হয়- আমাদের চলচ্চিত্রে বহু বছর পর নিজ শহরের জানা অথচ অজানা এক গল্প উঠে এসেছে নতুন অবয়বে, আয়নাবাজি’তে। এই গল্প শোনা হয়তো অনেকের, কিন্তু গুছিয়ে বলা কিংবা দেখা হয়নি কারও।
সিনেমার গল্পটা সদরঘাটের পাড় ঘেঁষে বসবাস করা সংগ্রামী মানুষের জীবন নিয়ে। বাঁচার জন্য একজন মানুষ কতরকম অভিনয় করতে পারেন এবং সেই মানুষটাই আবার কতটা সংস্কৃতিবোধ সম্পন্ন হতে পারেন- তার নতুন নজির আয়না ওরফে চঞ্চল চৌধুরী। এই অবহেলার শহরে মানুষ যে হাজার-হাজার অভিনয় করে বেড়ায় সেসবের একটি ঘটনাই আছে পুরো গল্পজুড়ে। অভিনয়শিল্পী আয়না। ওই আয়নায় একেকবার আসেন একেক চরিত্র নিয়ে। সেই চরিত্র কখনও প্রেমিক, কখনও গো-বেচারা, কখনও স্কুল শিক্ষক, কখনও খুনি, কখনও রাজনীতিবিদ।
আসল চরিত্রের সঙ্গে নকল চরিত্রের এক অন্যরকম কেমেস্ট্রি রয়েছে পুরোটা জুড়ে। তাই তো সিনেমার ট্রেলারেই আয়নার বক্তব্যে পাওয়া যায়- ‘চারপাশ বদলে যায়, থেমে যায় সময়, মিথ্যা তখন সত্যি হয়, সবার জন্য সব সত্যি, আর আমার জন্য অভিনয়’।
আয়নাবাজি’র পোস্টার। কিসের অভিনয়? এটা দেখতে অবশ্য দর্শককে যেতে হবে প্রেক্ষাগৃহে। আয়নাবাজি’র ভেলকির সূত্রটা কী! তাও দেখে নেওয়া জরুরি!
গল্পের কৌশলটাই ওখানে। একটা সুতা টান দিলে সিনেমার আগ্রহটাই বিনাশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আয়না যখন নিত্য-নতুন চরিত্রে ঢোকেন তখন নিশ্চিতভাবে হতবাক হতে হবে। আয়না যখন হৃদির সঙ্গে প্রেম করবেন তখন এক রোমান্টিকতার ভেতর দর্শক প্রবেশ করতে বাধ্য হবেন। আয়না যখন বাজারে মাছ বিক্রেতাকে তার মোহে জড়িয়ে মাছ কিনে ঘরে ফিরবেন তখন তার জাদুমন্ত্রের মোহে গল্পের এক অন্য কৌশল ঠিকই দর্শক আবিষ্কার করে নেবেন। অন্যদিকে সাংবাদিক পার্থ বড়ুয়া যখন ‘আয়না’ রহস্য উদঘাটনের জন্য পাগলের মতো অলি-গলি ঘুরে বেড়াচ্ছেন মোটর সাইকেলে চেপে- তখন হলভর্তি মানুষের মনে হয়েছে, পার্থ একাই ছুটছেন না, তার সঙ্গে সমান গতিতে ছুটছেন দর্শকরাও। অমিতাভ রেজা আয়নাকে তুলে ধরেছেন একজন সাংবাদিকের চোখ দিয়ে। যে চোখ আসলে শুধু পার্থ বড়ুয়ার নয়, এ চোখ সকলের। একজন পরিচালকের গল্প বলার নতুন ধরন স্বার্থকতা পায় এখানেই।    
অভিনয়ের কৌশল:
হৃদি চরিত্রে টিভি পর্দার উপস্থাপিকা নাবিলা অভিনয় করেছেন। এটা নাকি তার প্রথম সিনেমা! ছবিটি দেখার পর নিজেকেই দর্শক প্রশ্ন করবেন, তাই নাকি? হ্যাঁ, তাই। নাবিলা এই ছবিতে যতটা না ডায়লগ এবং অঙ্গসজ্জা দিয়ে দৃষ্টি কেড়েছেন ততোধিক মুগ্ধ করেছেন তার নির্বাক এক্সপ্রেশনগুলো দিয়ে।
ফলে বোকা বাক্সের উপস্থাপক নাবিলার গল্পটা এখনই ভুলতে পারেন। কারণ, এই ছবি দেখার পর দর্শকের মনে হবে- তারা এক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, শহুরে সাধারণ হৃদিকে দেখেছেন। এই হৃদিকেই যেন মনে মনে খোঁজেন মধ্যবিত্ত দর্শক মন।
আয়নাবাজির গল্পকার গাউসুল আলম শাওন। হলিউড স্টুডিওর মালিক হিসেবে অভিনয় করেছেন। চরিত্রের দৈর্ঘ্য বেশ ছোট, অথচ তার গভীরতা বিস্তর। অসাধারণ পার্শ্ব চরিত্র।
একটি শিশু চরিত্রকেও দেখা যায় সেই স্টুডিওর মালিকের সহকারী হিসেবে। শিশুটিও নিজেকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। জেল খানার পুলিশ চরিত্রে বৃন্দাবন দাস এবং সাংবাদিক পার্থ বড়ুয়ার সহকারী হিসেবে মিরাক্কেল তারকা জামিলের উপস্থিতিও ছিল বলার মতো। যারা ব্যক্তি পার্থ বড়ুয়াকে চেনেন, তারা হয়তো ‘জামিল’কে দেখে বিস্মিত হবেন। কারণ, ‘মোক্তার’ নামে এমনই এক বাস্তব চরিত্র রয়েছে পার্থর গানের স্টুডিওতে! এদিকে লুৎফর রহমান জর্জয়ের উপস্থিতিও ছোট এবং দাগ রেখে যাওয়ার মতো। মোট কথা, এসব চরিত্র ছোট হলেও কোনও মেদ নেই। মনে হবে না অপ্রাসঙ্গিক কিংবা ভাঁড়ামো।
আয়নাবাজি’তে নাবিলা-চঞ্চল। সবশেষ যার প্রশংসা না করলেই নয়। তিনি হলেন চঞ্চল চৌধুরী। ‘মনপুরা’য় নিজের দক্ষতা প্রমাণের পর কেটেছে তার অনেক সময়। এই সময়টার মধ্যে আসলে কতটা পরিণত হলেন তারও একটা পরীক্ষা ছিল তার জন্য। আর চঞ্চল চৌধুরী সেই পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরে উত্তীর্ণ হয়েছে আয়না দিয়ে। এমন চরিত্র খুব কম অভিনেতার ভাগ্যেই আসে, আর আসলেও পারদর্শীতার সঙ্গে সেটাকে ফুটিয়ে তোলার কাজটিও খুব কম অভিনেতাই পারেন। চঞ্চল চৌধুরী যেন নিজেকে ঢেলে দিয়েছেন এই চরিত্রে। চরিত্রটির ভাষাতেই বলতে হয়, ‘এক ক্যারেকটার থেকে আরেক ক্যারেকটার, শিফট হলেই সব হাওয়া।’ অভিনয়ের ক্ষেত্রেও চঞ্চল তাই করেছেন শুরু থেকে শেষ।
দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে ডেকে এনে অমিতাভ রেজা হৃদস্পন্দন বাড়ানোর মতো দুটো চমক দেখিয়েছেন। এমন কাণ্ড এর আগে দেশীয় চলচ্চিত্রের দর্শকরা পেয়েছেন বলে কোনও নজির এখনও নেই। চমক দুটোর একটি হলো ক্রাইম রিপোর্টার পার্থ বড়ুয়ার বিচ্ছেদ হওয়া প্রাক্তন স্ত্রী বিজরী বরকতউল্লাহ, কয়েদি চরিত্রে অমিতাভ রেজা এবং অন্যটি পুলিশ কর্মকর্তা আরিফিন শুভ। তাদের উপস্থিতি দর্শককে লটারি জেতার আনন্দ দিয়েছে। মোটাদাগে ছবির প্রতিটি চরিত্রের কোনও না কোনও ভূমিকা রয়েছে। অহেতুক চরিত্র একটিও নেই।
ক্যামেরার চোখ:
রাশেদ জামানের সিনেমেটোগ্রাফির দক্ষতায় প্রতিটি দৃশ্য পেয়েছে রঙিন প্রাণ। বিশেষ করে সদরঘাটের দৃশ্যগুলো বারবার যেসব অ্যাঙ্গেলে দেখানো সেগুলো ছিল এক কথায় চমৎকার। সবচেয়ে দুর্দান্ত ছিল টপ ভিউ শটগুলো। এসব দৃশ্যের জন্য ড্রোন ক্যামেরা নাকি হেলিকপ্টার নাকি অন্য কোনও প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে সেটা জানা নেই। তবে এই ধরনের শট এমন সুনিপুণভাবে এর আগে কোনও দেশীয় সিনেমায় চোখে পড়েনি। কারণ, ছবির ৯৯ ভাগ দৃশ্যই সম্ভবত আসল লোকেশন এবং আবহে ধারণ করা হয়েছে। সেটা বাসা হোক আর বৃষ্টিই হোক। সেট ফেলে কৃত্রিম আবহ সৃষ্টির চেষ্টা অমিতাভ রেজা করেননি এখানে। কারণ, চাইলে পুরো ছবির ৮০ ভাগই এফডিসির ফ্লোরে নির্মাণ সম্ভব ছিল। অন্যরা হয়তো তাই করতেন এই গল্প হাতে পেলে!  
ছবির পাঁচ অন্যতম চরিত্র। গান-সংগীত:
ছবির আবহ সংগীতে ছিলেন রিপন নাথ ও ইন্দ্রদীপ দাশ গুপ্ত। প্রেক্ষাগৃহের সাউন্ড সিস্টেম ভালো হলে আর আপনার কান ঠিকঠাক কাজ করলে- টের পাবেন, একটি ছবির আবহসংগীত কাকে বলে অথবা কেমন হওয়া উচিত? ছবিটিতে পিন-পতনের শব্দটিও আপনার কানে এসে মিষ্টি করে বেজে যাবে।
তবে গানের বেলায় ঢের আপত্তি আছে। অনেক দর্শকই অস্বস্তি নিয়ে অস্ফুটস্বরে বলেছেন, মনে হয়েছে ছবির মাঝে মাঝে হুটহাট গানগুলোকে পেস্ট করা হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ মিইয়ে গেছে ছবির দৃশ্য, অভিনয়, বিস্ময় আর গল্পের গভীরে হাবুডুবু খেয়ে।  তবে, ‘ধীরে ধীরে যাও না সময় আরও ধীরে বও’ গানটি সিনেমা শেষ হওয়ার পরও গুনগুন করে গাচ্ছিলেন কোনও কোনও দর্শক।
অপ্রাসঙ্গিক কৌশল:
‘আয়নাবাজি’ বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা। আসলে সকল ছবিই শেষ পর্যন্ত বাণিজ্য করতে চায়। বাণিজ্যের আশায় সিনেমা এই দেশে শেষ পর্যন্ত শিল্প রূপ পেতে ব্যর্থও হয়। প্রশ্ন আসতে পারে আয়নাবাজি’র মাধ্যমে আমাদের সিনেমা কি বলিউড ঢং থেকে শেষ পর্যন্ত বের হতে পারলো?
শুরু থেকে মুগ্ধতা ছাপ আছে বটে, তবে শেষ বিচারে বলতেই হয়- বলিউডি ছাপ থেকে কেন যেন পুরোপুরি বের হতে পারেননি অমিতাভ রেজা। ক্যামেরার কাজে কখনও কখনও বিজ্ঞাপনী ধারা উঠে এসেছে। ঠিক যেন বিজ্ঞাপন দেখছি যা অমিতাভের পুরনো ভাষা। সিনেম্যাটিক ভাষায় সিনেমার বিভিন্ন সময় কিছু অস্বস্তিকর ভঙ্গি ও ভাষা প্রকাশ হয়েছে। তা হয়তো সিনেমায় ব্যাপক বিনোদন দেয়, কিন্তু শেষ বিচারে প্রশ্ন আসে, আদৌ কি সেসবের দরকার ছিল? যেখানে গল্পের গভীরতা এবং নির্মাণ গতি এতটাই স্বচ্ছ।
এদিকে সিনেমার অন্যতম প্রধান চরিত্র ক্রাইম রিপোর্টার পার্থ বড়ুয়া। আগেই বলেছি, যার চোখ দিয়েই মূলত দর্শকরা ছবিটি দেখেছেন শুরু থেকে শেষ। সেই চরিত্রটি যদি সারাক্ষণ কোমরে মদের ক্যান নিয়ে ঘুরে বেড়ান। যখন তখন সেটাতে চুমুক দেন, এমনকি পত্রিকার সম্পাদকের সামনেও! তাহলে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি দুধের গামলায় এক বিচি তেঁতুল পড়ার মতো হলো না? তাছাড়া একজন রিপোর্টার ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে ছবি তোলেন! সেটাও এই সময়ে অপ্রাসঙ্গিক।  
আবার সিনেমাটি মুক্তির আগে প্রচারণার নামে দর্শককে ‘চুম্বন দৃশ্য’ নিয়ে অভিনেতা-অভিনেত্রীর কেমন লেগেছে সেসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে অন্তর্জালে। মানে দর্শককে বোঝাতে চেয়েছে, এই সিনেমায় কিন্তু ‘কিসিং সিন’ও আছে, চলে আসো যদি দেখতে চাও।
কেন যেন পরিচালকরা সব ঠিকঠাক থাকলেও সুড়সুড়ির কাছে আশ্রয় চান। কেন? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য অমিতাভ রেজাই দিতে পারবেন। সব চাইতে বিতর্কের বিষয়টি হলো, ওই চুম্বন দৃশ্য নিয়ে যে বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে সেখানে সিনেমার ওই শিশুটির বিভিন্ন ভঙ্গিও ব্যবহার করা হয়েছে। এটা কি ভায়োল্যান্স নয়? অথচ আদতে ছবির পর্দায় তেমন কিছুই নেই, যা তারা ছবি মুক্তির আগে প্রচার করতে চেয়েছেন ফলাও করে।
টিম ‘আয়নাবাজি’। ইতি টানার আগে:
শুরুটা দিয়েই শেষ করতে চাই। সেটা হলো মানুষ গল্প দেখতে চায়। গল্প পড়তেও চায়। তবে সব তাসের কার্ডগুলো থাকে পরিচালক এবং সেই সিনেমার কলাকুশলীদের হাতে। অসাধারণ গল্প অথচ গল্পটা বলতে পারেনি পরিচালক। এমনও তো হয়। আবার অসাধারণ গল্প, পরিচালকও বলেছেন অসাধারণভাবে। কিন্তু গল্পটা পড়তে পারেনি দর্শক। সবই তখন ব্যর্থতার গ্লানিতে ভরে ওঠে।
‘আয়নাবাজি’ এমন এক চলচ্চিত্র যেখানে গল্পটা সুন্দর করে লেখা হয়েছে, পরিচালক গল্পটা চমৎকারভাবে বলেছেন। যা সিনেমাপ্রেমীরা পড়তেও পারছেন সহজে। আয়না’র স্বার্থকতা আপাতত এতটুকুই।
আর হ্যাঁ! আরেকটি সার্থকতা হলো- আয়নাবাজির ফিনিশিং। অনেক ভালো ছবি মার খায় ক্লিন ফিনিশিংয়ের অভাবে। আয়নাবাজি এক অপ্রত্যাশিত মজার ফিনিশিং দিয়ে দর্শককে বাধ্য করেছে হাততালি দিয়ে উঠতে।
সুতরাং, ছবিটি দেখার পর কেউ যদি আপনাকে প্রশ্ন করে ‘আয়নাবাজি’ কেমন? তখন উত্তর দিতে পারেন, বাজিটা কিন্তু মাত করে দিয়েছে। তারপরও যদি প্রশ্ন করে- সেটা কীভাবে? তবে তাকে বলে দিতে হবে, আগে দেখে আসুন তারপর বলছি...। কারণ, ‘আয়নাবাজি’ শুধু আয়নার মধ্যেই নেই, এই বাজিটা হলিউড স্টুডিওর ঐ ছোট্ট শিশুর হাত ধরে আমাদের সবার। যে বাজিটা পুরো বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য। ‘আয়না’র মতোই যে বাজিটা জেতা এখন খুবই দরকার।
‘আয়নাবাজি’র পোস্টার। যেটি নকলের অভিযোগ রয়েছে। লেখক: চিত্র সমালোচক
/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সম্প্রচারের দুই দশকে...
সম্প্রচারের দুই দশকে...
দোকান সাজাতে গিয়ে গানচিত্র নির্মাণ!
দোকান সাজাতে গিয়ে গানচিত্র নির্মাণ!
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
রাশি-তামান্নার নজরকাড়া যুগলবন্দি  (ভিডিও)
রাশি-তামান্নার নজরকাড়া যুগলবন্দি (ভিডিও)
‘আদম’ নির্মাতা হিরণ মারা গেছেন
‘আদম’ নির্মাতা হিরণ মারা গেছেন