X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভাওয়াইয়া সম্রাট, জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

বিনোদন রিপোর্ট
২৭ অক্টোবর ২০১৬, ০০:০১আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৫৭

বিদেশে আব্বাসউদ্দীন আহমদ। বাংলার ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাসউদ্দীন আহমদ। বরেণ্য এ মানুষটির জন্ম ১৯০১ সালের এই দিনে (২৭ অক্টোবর) পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুর গ্রামে। আজ বৃহস্পতিবার এই কিংবদন্তির ১১৫তম জন্মবার্ষিকী।

আব্বাসউদ্দীন আহমদের পিতা জাফর আলী আহমেদ ছিলেন তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতের উকিল। বলরামপুর স্কুলে আব্বাসউদ্দিনের শিক্ষা জীবন শুরু হয়। ১৯১৯ সালে তুফানগঞ্জ স্কুল থেকে তিনি প্রবেশিকা এবং ১৯২১ সালে কুচবিহার কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। এখান থেকে বিএ পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়ে তিনি সংগীত জগতে প্রবেশ করেন। এ জগতে তার ছিল না কোনও ওস্তাদের তালিম। আপন  প্রতিভাবলে নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরেন। তিনি প্রথমে ছিলেন পল্লী গানের একজন গায়ক। যাত্রা, থিয়েটার ও স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান শুনে তিনি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং নিজ চেষ্টায় গাওয়া রপ্ত করেন। এরপর কিছু সময়ের জন্য তিনি ওস্তাদ জমিরউদ্দিন খাঁর কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত শিখেছিলেন।
রংপুর ও কুচবিহার অঞ্চলের ভাওয়াইয়া, ক্ষীরোল চটকা গেয়ে আব্বাসউদ্দীন প্রথমে সুনাম অর্জন করেন। তারপর জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, বিচ্ছেদি, দেহতত্ত্ব, মর্সিয়া, পালাগান ইত্যাদি গেয়ে জনপ্রিয় হন। তিনি তার দরদভরা সুরেলা কণ্ঠে পল্লী গানের সুর যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন তা আজও অদ্বিতীয়। তিনি কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদদীন, গোলাম মোস্তফা প্রমুখের ইসলামী ভাবধারায় রচিত গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন।
দার্জিলিংয়ে কবি গোলাম মোস্তফা, জসীমউদদীন এবং আব্বাসউদ্দীন আহমদ। সঙ্গে আব্বাসউদ্দীনের স্ত্রী-সন্তান

আব্বাসউদ্দীন ছিলেন প্রথম মুসলমান গায়ক যিনি আসল নাম ব্যবহার করে ভারতের এইচএমভি থেকে গানের রেকর্ড বের করেন। রেকর্ডগুলো ছিল বাণিজ্যিকভাবে বেশ সফল। তিনি ১৯৩১ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বসবাস করেন। প্রথমে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ডিপিআই অফিসে অস্থায়ী পদে এবং পরে কৃষি দপ্তরে স্থায়ী পদে কেরানির চাকরি করেন। এ কে ফজলুল হকের মন্ত্রীত্বের সময় তিনি রেকর্ডিং এক্সপার্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। চল্লিশের দশকে আব্বাসউদ্দীনের গান পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে মুসলিম জনতার সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশ বিভাগের পর (১৯৪৭ সালে) ঢাকায় এসে তিনি সরকারের প্রচার দপ্তরে এডিশনাল সং অর্গানাইজার হিসেবে চাকরি করেন।

আব্বাসউদ্দীন আহমদের নিজ কণ্ঠের কয়েকটি গান থাকছে নিচের লিংকে:


পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৫৫ সালে ম্যানিলায় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংগীত সম্মেলন, ১৯৫৬ সালে জার্মানিতে আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সম্মেলন এবং ১৯৫৭ সালে রেঙ্গুনে প্রবাসী বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে তিনি যোগ দেন। আব্বাসউদ্দিন আহমদ  গানের জগতে বিচরণের পাশাপাশি ৪টি বাংলা চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। সিনেমাগুলো হচ্ছে ‘বিষ্ণুমায়া’ (১৯৩২), ‘মহানিশা’ (১৯৩৬), ‘একটি কথা’ ও ‘ঠিকাদার’ (১৯৪০)। ‘আমার শিল্পীজীবনের কথা’ (১৯৬০) আব্বাসউদ্দিনের রচিত একমাত্র গ্রন্থ।
সংগীতে অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর প্রাইড অব পারফরমেন্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে (১৯৮১) ভূষিত হন। ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর পল্লীগানের এ কিংবদন্তি মৃত্যুবরণ করেন। তার সন্তান মুস্তাফা জামান আব্বাসী এবং ফেরদৌসী রহমানও দেশের খ্যাতিমান শিল্পী।
আব্বাসউদ্দিন আহমেদ। /এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
রসায়ন পরীক্ষায় ১০ জনের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’!
রসায়ন পরীক্ষায় ১০ জনের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’!
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
‘লম্বা’ নায়িকা প্রসঙ্গে কৃতির ব্যাখ্যা
‘লম্বা’ নায়িকা প্রসঙ্গে কৃতির ব্যাখ্যা
জানা-অজানা ১০ তথ্যে সত্যজিৎ রায়
প্রয়াণ দিনে স্মরণজানা-অজানা ১০ তথ্যে সত্যজিৎ রায়
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!