X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘সবই এক, কিন্তু জয়া দিদির সঙ্গে দেখা করতে আমার পাসপোর্ট-ভিসা লাগছে!’

ওয়ালিউল মুক্তা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০০:০৫আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৩২

ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে যখন হোটেলের দিকে যাচ্ছিলাম তখন মনে হচ্ছিল, এটা সেই শহর- যেখানে হলুদ পাঞ্জাবি পরা হিমুরা খালি পায়ে ঘুরে বেড়ায়…। ঢাকা শহর প্রসঙ্গে কথাগুলো বেশ রোমাঞ্চ নিয়ে বলছিলেন হ‌ুমায়ূন আহমেদে ডুবে থাকা কলকাতার পাঠক প্রিয়াঙ্কা সরকার।
প্রিয়াঙ্কা সরকার ২০০৮ সালে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ দিয়েই কলকাতার দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন এই হ‌ুমায়ূন ভক্ত। ‘কাগজের বউ’, ‘ন হন্যতে’, ‘ডামাডোল’সহ অর্ধশত ছবিতে কাজ করা এ নায়িকা এবার বাংলাদেশের দর্শকদের হৃদয়ের খোঁজ নেবেন।
শুক্রবার(২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় এসেছেন ‘হৃদয় জুড়ে’ ছবির মহরতে। রফিক সিকদার পরিচালিত এ ছবিতে চিত্রনায়ক নিরবের বিপরীতে অভিনয় করবেন তিনি। শনিবার বিএফডিসিতে ছবির মহরতের আগে বাংলা ট্রিবিউন-এর সঙ্গে কথা বলেন প্রিয়াঙ্কা। জানান, কলকাতা টু ঢাকা ইন্ড্রাস্ট্রি ভ্রমণের গল্প। প্রসঙ্গিক ভাবেই সেই গল্পে উঠে এসেছে বাংলাদেশের কিংবদন্তি লেখক-নির্মাতা হ‌ুমায়ূন আহমেদ ও অন্যতম অভিনেত্রী জয়া আহসানের কথা।

প্রিয়াঙ্কা সরকার বাংলা ট্রিবিউন: কলকাতা থেকে বিমানে উঠার আগে আপনার কাছে বাংলাদেশটা কেমন ছিল? আর এখনইবা কেমন বাংলাদেশকে দেখছেন?

প্রিয়াঙ্কা সরকার: আমার বাবার জন্ম বিক্রমপুরে। ৪০’-এর দশকে দাদা-বাবা কলকাতা চলে যান। ছোটবেলায় চাচাদের কাছে সেই চলে যাওয়ার গল্প শুনতাম। বড় হয়েও অনেক কথা শুনেছি। তারা সবসময় বাংলাদেশের কথা বলেন। আর বাংলাদেশকে আমার কাছে অন্যভাবে দেখিয়েছেন হ‌ুমায়ূন আহমেদ। আমি তার পাঁড়ভক্ত। হিমু, মিসির আলি সিরিজ আমার প্রায় মুখস্ত। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে যখন হোটেলে যাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিল, এটা সেই শহর, যেখানে হলুদ পাঞ্জাবি পরা হিমুরা খালি পায়ে ঘুরে বেড়ায়। দুপুরে যখন রমনা থানা ক্রস করছিলাম তখন মনে হচ্ছিল আরে, এ থানার কথা কতবার উপন্যাসে পড়েছি। সত্যি বলতে, বাংলাদেশে আসতে পারাটা আমার কাছে অন্যরকম!

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি প্রায় অর্ধশত ছবিতে অভিনয় করেছেন। সংখ্যায় বললে ৪৫-৪৬। এতদিন পর কেন বাংলাদেশে কাজ করতে চাইলেন। আরও  আগেও তো পারতেন!

প্রিয়াঙ্কা: কিছু কাজের অফার যে পাইনি, তা নয়। কিন্তু ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। অনেক সময় গল্প ভালো লাগত না বা আমি সিডিউল মেলাতে পারতাম না।

প্রিয়াঙ্কা সরকার বাংলা ট্রিবিউন: আগের প্রশ্নের সঙ্গে আরও একটি কথা জুড়ে দেওয়া যায়, ক্যারিয়ারের এত দিন পর এসে আপনি দেবের সঙ্গে কাজ করছেন। আপনাদের নতুন ছবি ‘চ্যাম্প’।  

প্রিয়াঙ্কা: সেভাবে কখনও সুযোগ হয়নি। আমার কাছে যেমন কাজ এসেছে, তেমনই করেছি। আমার প্রথম ছবি ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’। এতে রাহুলের সঙ্গে আমার জুটিটা দর্শকরা লুফে নিলে দুজনে প্রচুর অফার পেতে থাকি। দর্শকরাও চান, তাই আমরা অনেক ছবিতে কাজ করেছি। আর ‘চ্যাম্প’-এর অফার অনেক পরে এলো। ছবিটির শুটিং এখন চলছে।

বাংলা ট্রিবিউন: ২০টিরও বেশি ছবিতে আপনি ও আপনার স্বামী রাহুল ব্যানার্জির সঙ্গে কাজ করেছেন। এটাও অন্যতম কারণ?

প্রিয়াঙ্কা: হ্যাঁ। এটাও একটা কারণ। দেবের সঙ্গে এটাই আমার প্রথম জুটি বেঁধে কাজ। তবে আমার প্রথম ছবিতে দেব কিন্তু অতিথি হিসেবে পর্দায় এসেছিলেন। আবার একটা বিষয়, দেব তাদের সঙ্গেই ছবি করেছে, যারা তার সঙ্গে জুটি বেঁধে সফল। এটা আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে। আমার ও রাহুলের ছবিটি ক্লিক করে যাওয়ার পর আমরাও এ জুটিকে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। তাই দেব ও আমার কখনও কাজ করা হয়নি।

প্রিয়াঙ্কা সরকার

বাংলা ট্রিবিউন: কলকাতায় এখন আসলে কী অবস্থা? মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে হিন্দি ছবির প্রভাব খুব বেশি। বিশেষ করে, কলকাতা শহরে আপনাদের টলিউডের বাংলা ছবি হয়তো টিকতে পারছে না। এটার কারণ কী? আবার প্রশ্নটাকে একটু ঘুরিয়েও করা যেতে পারে। যদি বলি, ঠিক এ কারণেই কি বাংলাদেশের মার্কেটের প্রতি আপনাদের মনযোগ বাড়ছে?

প্রিয়াঙ্কা: না, সেভাবে বলব না। দু’বছর আগে আমি যখন আপনাদের জয়া দিদির (জয়া আহসান) সঙ্গে ‘রাজকাহিনী’র কাজটি করি, তখন তার সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে, আলাপ হয়। আমরা একসঙ্গে মেকআপ রুমে দীর্ঘ সময় আড্ডা দিয়েছি। তখন আমি ভীষণভাবে বুঝতে পারি, আমাদের কথা এক, খাওয়া-দাওয়া এক, ভাবনা এক; কিন্তু জয়া দিদির সঙ্গে দেখা করতে আমার পাসপোর্ট ভিসা লাগছে! কী অদ্ভুত। কেমন যেন আমার একটা কষ্টের জায়গা তৈরি হলো। আমি বাংলা ভাষাতেই ডায়লগ বলি। একইভাবে অভিনয় করি। দর্শকও একই ভাবে নেয়। তারপর…

আমার ফেসবুক পেজ আছে। সেখানে কলকাতা বা বাংলাদেশের প্রচুর দর্শক আছেন। তাদের ফিডব্যাক আমি পাই। ভালো লাগে। আর সেক্ষেত্রে তো আমি চাইব আরও দর্শক বাড়ুক। এটা হলে মন্দ কী! সেটা বাংলাদেশ বলেই হয়তো ভাবনা নয়। এটা আমার ভাষা বা নিজের মানুষ বলেই চাই। মানুষ তো ইম্প্রুভ করতে চাইবে, তাই না? আমিও চাই।

প্রিয়াঙ্কা সরকার বাংলা ট্রিবিউন: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প সম্পর্কে আপনার কী ধারণা ছিল?

প্রিয়াঙ্কা: বাংলাদেশের ছবি যে খুব বেশি দেখা হয়েছে, তা নয়। মিম (বিদ্যা সিনহা), জয়া দিদি’র সঙ্গে আলাপ আছে। কলকাতাতে অনেক বাংলাদেশি শিল্পী নিয়মিত যাচ্ছেন তাদের সঙ্গেই আলাপ। তাদের কাছ থেকে তথ্য পাই। এমনই। খুব স্পষ্ট কিছু নয়! 

বাংলা ট্রিবিউন: নিরবের কাজ আগে দেখেছেন?

প্রিয়াঙ্কা: না। নিরবের সঙ্গে আগে দেখা হয়নি। তাকে সেভাবে জানতাম না।

বাংলা ট্রিবিউন: যদি বলা হয়, তাহলে নিরবের সঙ্গে কেন কাজ করতে আগ্রহী হলেন, কী উত্তর দেবেন?

প্রিয়াঙ্কা: ‘হৃদয় জুড়ে’ ছবির গল্পটা আমার ভালো লাগে। রফিক দাদার (সিকদার) সঙ্গে কথা হয়। আর এরসঙ্গে বাংলাদেশে আসারও একটা সুযোগ হলো।

প্রিয়াঙ্কা সরকার ও নিরব

বাংলা ট্রিবিউন: বিক্রমপুর যাবেন?

প্রিয়াঙ্কা: এবারে হয়তো যাওয়া হবে না। মার্চে আবার আসব। তখন ২০-২৫ দিন থাকতে হবে। তখন যাওয়ার ইচ্ছে আছে।

বাংলা ট্রিবিউন: এবার পরিচিত কার কার সঙ্গে দেখা করবেন?

প্রিয়াঙ্কা: ইতোমধ্যে জয়া দিদির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি বাসায় দাওয়াত দিয়েছেন। দেখি, সময় করে একসময়ে তার বাসায় ঘুরে আসব।

প্রিয়াঙ্কা সরকার ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/ বাংলা ট্রিবিউন
/এম/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের বড় চমক
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের বড় চমক
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!