দরজার হুড়কো ঠেলে পার হতেই পাহাড়, ঝর্ণা আর বৃক্ষরাজি। গাঢ় অন্ধকার ভেদ করে ভেসে ভেসে আসে রবীন্দ্রগান! না, এত কিছুইবা দরজার চৌকাঠে বন্দি হয় কীভাবে!
এবার একটু প্রথমে ফেরা যাক; স্কলাসটিকা বিদ্যালয় মিলনায়তনের দরজায় পা রাখতেই চোখে পড়ে পাহাড়, ঝর্ণা আর বৃক্ষরাজি। থরে থরে সাজানো কিছু গাছ। পাশে ঝুলানো লতানো দোলনা। হঠাৎ হঠাৎ ভেসে আসে গান। ঠিক এভাবেই সাজ দিয়ে রাখা হয়েছে মিলনায়তন মঞ্চটিকে!
দেশের অন্যতম এ ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় পার করলো ৪০ বছর। আর এটি উদযাপনে শুক্রবার (৩ মার্চ) এমন সাজে রাখা হয়েছিল মিরপুরে বিদ্যালয়টির সিনিয়র শাখা।
সন্ধ্যায় এখানে মঞ্চায়ন হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটক ‘মুক্তধারা’। আর এর জন্যই এত আয়োজন। মঞ্চ ছাড়াও এর দুপাশে সার বেঁধে বসেছিল দু’দল শিক্ষার্থী। যারা মূলত কোরাস গেয়ে নাটকটিতে সঙ্গত দিয়েছে। আর অভিনয়ে ছিলেন খালিদ জেড সরকার, ইপসিতা আশরাফি, অহনা করিম, রাইয়ানা ইসলাম, মারজান ইসলামসহ বিদ্যালয়ের সপ্তম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা।
গানে অভিনয়ে মঞ্চে উঠানো এ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন স্কুলটির নাট্যশিক্ষক নাজমুল ইসলাম।
তবে এর আগে বিদ্যালয়ের এ বিশেষ ক্ষণটি আলাদাভাবে তুলে ধরেন প্রধান শিক্ষকা ফারাহ সোফিয়া আহমেদ। জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে এই সাংস্কৃতিক আয়োজনের কথা।
আয়োজনের প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। মজার বিষয় হলো, দেশের অন্যতম এ নাট্যব্যক্তিত্বও একসময় মঞ্চে ‘মুক্তধারা’ নাটকটি মঞ্চায়ন করেছিলেন। তার বক্তব্যে নিজেদের সে স্মৃতিচারণও করেন। বলেন, ‘আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাটকটি মঞ্চায়ন করেছিলাম। একটি দৃশ্যে পানির ব্যবহার আছে। আমার মনে আছে, এ জন্য আমরা ফায়ার বিগ্রেডের গাড়ি ব্যবহার করেছিলাম! মজার বিষয় হচ্ছে, এ স্কুলে আমার সন্তান পড়ালেখা করেছে। আজ আমি এমন একটি নাটক দেখছি, যার অভিজ্ঞতা আমারও আছে। সব মিলিয়ে অন্যরকম অনুভূতি।’
এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৪০ বছরপূর্তি উপলক্ষে বছরব্যাপী বেশ কিছু আয়োজন করছে তারা। ইতোমধ্যে দুটি আয়োজন হয়েছে। এছাড়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও একটি ইংরেজি নাটকের মঞ্চায়ন হবে বছর শেষে। এছাড়া চলবে তাদের নিয়মিত সাংস্কৃতিক আয়োজন।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন
/এম/এমএম/