রেলপথে থেমে গেলো দেশীয় চলচ্চিত্রের গুণী অভিনেতা মিজু আহমেদের জীবনের রেলগাড়ি। সোমবার (২৭ মার্চ) রাতে ট্রেন ভ্রমণকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই অভিনেতার মরদেহ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল দশটার দিকে তার প্রিয় কর্মস্থল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) নেওয়া হয়।
তার মৃতদেহের প্রতি ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা-প্রযোজক ও অন্যান্য কলাকুশলীরা। সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় মরুহুমের দ্বিতীয় জানাজা। এতে অংশ নেন কাজি হায়াৎ, আহমেদ শরীফ, ইলিয়াস কাঞ্চন, টেলি সামাদ, মিশা সওদাগর, ওমর সানি, অমিত হাসান, আমিন খান, সাইমন, জায়েদ খানসহ আরও অনেকে।
জানাজা শেষে বেলা এগারোটার দিকে প্রিয় এই অভিনেতার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে। মিজু আহমেদের ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে কুষ্টিয়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৭ মার্চ) কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে দিনাজপুর যাওয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশনে নামিয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৩ বছর।
কুষ্টিয়ায় ১৯৫৩ সালের ১৭ নভেম্বর জন্মেছিলেন মিজু আহমেদ। তার প্রকৃত নাম মিজানুর রহমান। শৈশব থেকে থিয়েটারের প্রতি আগ্রহী ছিলেন তিনি। তাই কুষ্টিয়ার স্থানীয় একটি নাট্যদলে যোগ দেন।
১৯৭৮ সালে ‘তৃষ্ণা’ ছবির মাধ্যমে অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন মিজু আহমেদ। কয়েক বছরের মধ্যে ঢালিউডে খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান তিনি। অসাধারণ অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯২ সালে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
মিজু আহমেদ অভিনীত ছবির তালিকায় আরও উল্লেখযোগ্য- মহানগর (১৯৮১), স্যারেন্ডার (১৯৮৭), চাকর (১৯৯২), সোলেমান ডাঙ্গা (১৯৯২), ত্যাগ (১৯৯৩), বশিরা (১৯৯৬), আজকের সন্ত্রাসী (১৯৯৬), হাঙ্গর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭), কুলি (১৯৯৭), লাঠি (১৯৯৯), লাল বাদশা (১৯৯৯), গুন্ডা নাম্বার ওয়ান (২০০০), ঝড় (২০০০), কষ্ট (২০০০), ওদের ধর (২০০২), ইতিহাস (২০০২), ভাইয়া (২০০২), হিংসা প্রতিহিংসা (২০০৩), বিগ বস (২০০৩), আজকের সমাজ (২০০৪) ইত্যাদি।
অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন মিজু আহমেদ। প্রয়াত অভিনেতা রাজীবকে নিয়ে তার গড়া প্রযোজনা সংস্থা ফ্রেন্ডস মুভিজ থেকে বেশ কয়েকটি ছবি তৈরি হয়েছিল।
/এমএম/